নেত্রকোনার মদন উপজেলায় নিজ বসতঘর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের বালালি গ্রাম থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন-নান্দু মীর (৫৫) ও তার স্ত্রী হিমা আক্তার ওরফে মেরাজু (৪৫)। নান্দু মীরকে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় আর তার স্ত্রীকে মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে দুটি সন্তান রয়েছে। ৮ বছর বয়সী ছেলে অপূর্ব ও ৫ বছর বয়সী কন্যা জ্যোতি।
নান্দু মীর নায়েকপুর ইউনিয়নের আলমশ্রী গ্রামের মৃত শামছু মীরের ছেলে। আর স্ত্রী হিমা আক্তার মেরাজু তিয়শ্রী ইউনিয়নের বালালি গ্রামের মৃত আব্দুল মন্নাফের মেয়ে। তবে তাদের মৃত্যুর সঠিক কারণ কেউ বলতে পারছেন না।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তারা গত প্রায় দুই যুগ আগে বিবাহে আবদ্ধ হন। এরপর তাদের দীর্ঘ ১৮ বছর পরে প্রথম ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। এর মাঝে গত প্রায় বছর দশেক আগে শ্বশুর বাড়ির এলাকায় তিয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় জমি কিনে বাড়ি তৈরি করেন নান্দু মীর। তিনি কৃষি ও গরু-ছাগল পালন করতেন। তাদের মধ্যে প্রায় সময়ই কলহ লেগে থাকতো।
জানা যায়, প্রতিদিনের মতো সোমবার রাতেও সন্তানদের ঘুম পাড়িয়ে নিজ ঘরেই স্বামী-স্ত্রী শুয়ে পড়েন। মঙ্গলবার সকালে বালালী গ্রামের সুনাই মিয়া নান্দু মীরের ছাগলের কাছে নিজের ছাগলের প্রজনন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আসলে ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পান। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর ডাকাডাকি করলে শিশুরা ভেতর থেকে ঘরের দরজা খুলে দিয়ে কান্নাকাটি শুরু করে।
এসময় ঘরের ভেতর মাটিতে পড়ে থাকা মেরাজু আক্তার হিমার রক্তাক্ত দেহ ও নান্দু মীরের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। পরে স্থানীয় লোকজন মদন থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝুলন্ত লাশ নামিয়ে তাদের সুরতহাল করে লাশ মর্গে পাঠায়।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী জানান, কোনো ক্লু এখনো পাওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্ত্রীকে শাবল দিয়ে আঘাত করে হত্যার পর তিনিও আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই