চিরনিদ্রায় নিজ গ্রামের বাড়িতে শায়িত হলেন ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদ। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার পিজাহাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে দ্বিতীয় জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এমন অসময়ে চলে যাওয়ায় শামীমের স্বজনসহ এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ছেলেকে হারিয়ে মা মুর্ছা যাচ্ছেন বারবার।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের রায়পুর-পিজাহাটি গ্রামে শহীদ শামিম আহমেদকে গার্ড অব অনার প্রদান শেষে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমদাদুল হক তালুকদারের নেতৃত্বে শহীদ শামীম আহমেদের গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
এসময় ময়মনসিংহ বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দী ও নেত্রকোনা ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপপরিচালক হাফিজুর রহমান ফায়ার সার্ভিস থেকে গার্ড অব অনার দেন। এরপর অনান্য রাজনৈতিক সামাজিক নেতৃবৃন্দসহ এলাকার দল মত নির্বিশেষে মানুষ জানাজায় অংশ নেন।
জানাজায় অংশ নেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক মেয়র দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া দুলালসহ বিভিন্নস্তরের নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আত্মীয় স্বজনরা শেষ দেখা দেখে গেলেও মায়ের আহাজারি শেষ হবার নয়। বারবার পুত্রশোকে মুর্ছা যাচ্ছেন তিনি। ৬ ছেলের মধ্যে ৫ জনই শামীমকে পড়াশোনা করিয়েছিলেন।
শামীমসহ দুই ছেলেই মারা যাওয়ায় নাতি নাতনিদের ভার যেন বৃদ্ধা রাজবানুর কাধে। তিনি চান সরকার যেন শামীমের অনাথ সন্তানদের পাশে থাকে। তিনি বলেন, দুই ছেলের নাতিদের দেখার দায়িত্ব যেন আমাকেই দিলো আল্লাহ। কিন্তু ছেলের এমন গর্বিত কাজে তিনি গর্ববোধ করেন।
এর আগে গাজীপুরের টঙ্গীতে রাসায়নিকের গুদামে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মী শামীম আহমেদ অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকালে মারা যান। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরে গতকাল প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস কতৃপক্ষ পরিবারটির পাশে থাকবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমদাদুল হক তালুকদার। তিনি বলেন, সার্বিকভাবে তাদের সহযোগিতা থাকবে এই শহীদ পরিবারের প্রতি।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দী বলেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনে সহকর্মী শহীদ হয়েছেন। এর জন্য ফায়ার সার্ভিস গর্বিত।
উল্লেখ্য, শামীম আহমেদ চাকরিতে যোগদান করেন ২০০৪ সালের ১৬ আগস্ট। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রীসহ তিন সন্তান রেখে গেছেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ