ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে অভিযান না থাকলেই নিশ্চিন্তে ইলিশ নিধনে লিপ্ত হয় শিকারীরা। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা হতে রাত ৯টা পর্যন্ত সরেজমিনে উপজেলার এমপি ডাঙ্গী ভাঙ্গার মাথা হতে হরিরামপুরের নমুরছাম চরশালিপুর হয়ে হয়ে সদরপুরের জল সীমানা ও গোপালপুর ফেরী ঘাট পর্যন্ত এ দৃশ্য চোখে পড়ে। যদিও মৎস্য দপ্তরের দাবি নদীতে মাছ কম থাকায় তারা জেলেরা নদীতে নামে না।
গত ৪ অক্টোবর হতে ২৫ অক্টেবর পর্যন্ত ইলিশ আহরন,পরিবহন,মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছে সরকার। উপজেলা মৎস দপ্তর থেকে পওয়া তথ্যমতে ৪ অক্টোবর হতে ১৫ অক্টোবর এ পর্যন্ত নির্বাহী হাকিম কর্তৃক ২টি ভ্রাম্যমান আদলত ও মৎস্য কর্মকর্তা কর্তৃক ৪টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এ ১২ দিনে কোন জেল জরিমানা না থাকলেও আঠারো কেজি ৩ শত গ্রাম ইলিশ জব্দ করেছেন। এছাড়া তারা ৭৩ হাজার মিটার বিভিন্ন প্রকার জাল ধ্বংস করেছেন বলে দাবী করেন।
ওই দিন বিকেল ৪টার দিকে এমপি ডাঙ্গী ভাঙ্গার মাথার অপর প্রান্তে দেখা যায় তিন জেলে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে জাল গোছাচ্ছে। এসময় তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় নিষেধাজ্ঞা শুরুর দিন হতেই তারা মাছ শিকার করেন। তারা আরও জানান এবার অভিযান কম তাই মাছ শিকারে খুব বেশী বেগ পেতে হচ্ছে না।
রাত ৮টার দিকে গোপালপুর ফেরী ঘাট হতে সদরপুরের জলসীমার পূর্বের স্থানের দৃশ্য ছিল যেন ইলিশ শিকারের উৎসব। ৮ হতে ১০ টি নৌকা নদীতে মাছ শিকার করছেন। অনেকে প্রকাশ্যে আলো জ্বালিয়ে কারেন্ট জাল তুলছেন। এ সময় তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় দিনে দূর হতে দেখা যায় এ জন্য তারা রাতে মাছ ধরতে নদীতে নামেন। একেক দলে ৪ হতে ৬ জন অংশীদার থাকেন। অভিযান না থাকলে অংশিদাররা মিলে সারারাত পর্যায়ক্রমে মাছ শিকার করেন। ১০০ মিটারের একটি জাল ৩০ মিনিটের মত পেতে রাখলে ৫ হতে ১০ কেজি মাছ পাওয়া যায়। যদি কখনও মাছের ঝাঁক আটকে যায় তাহলে ৩০ হতে ৪০ কেজি পর্যন্ত মাছ উঠে। এ মাছ তারা বিভিন্ন মাধ্যমের সহায়তায় গ্রামে গ্রামে পৌছে দেন। এক কেজি ওজনের মাছ ৬ শত টাকা ও এর কম ওজনের মাছ ৫ শত টাকা বিক্রী করেন।
অবশ্য মৎস কর্মকর্তা এস এম মাহমুদুল হাসান দাবি করেন নদীতে এখন মাছ কম তাই জেলেরা নদীতে খুব কম নামে। এ কারণে তারা যখন নদীতে অভিযানে যান তখন জেলে পাওয়া যায় না। এছাড়া বাজেট স্বল্পতার কারণে বেশী অভিযান পরিচালনা করাও সম্ভব হচ্ছে না। মা ইলিশ রক্ষায় নিজের ভূমিকায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন