ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরিপ মতে, গত ২০২১ সালে প্রায় দেড় হাজার মানুষ সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।
আর ফুলপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন ইনচার্জ আল আমিনের দেওয়া তথ্য মতে, একই বছর ৫৬টি আগুনের ঘটনা ঘটে। এতে ১৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি। এর অধিকাংশ ঘটেছে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে। তাই উন্নত শর্ট সার্কিট ব্যবহার করতে হবে ও ট্রেনিংপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান দিয়ে বিদ্যুতের লাইন প্রতি ৬ মাস অন্তর অন্তর চেক করাতে হবে বলে এ কর্মকর্তা মনে করেন।
ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. প্রানেশ চন্দ্র পন্ডিত বলেন, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় দেড় হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ মারাও গিয়েছেন। রেজিস্ট্রেশন ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০২১ সনের জানুয়ারিতে ৯ জন রোগী তাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর গুরুতর আহত ২৮ জনকে ময়মনসিংহে রেফার্ড করা হয়েছে। ভর্তি না হয়ে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭৯ জন। ওই মাসে মোট ১১৬ চিকিৎসা নিয়েছেন। একইভাবে ফেব্রুয়ারিতে ১৪১ জন, মার্চে ১১৫ জন, এপ্রিলে ১৩৪, মেতে ৯১, জুনে ১৩৭, জুলাইয়ে ৯৮, আগস্টে ৯৯, সেপ্টেম্বরে ১৪৭, অক্টোবরে ১২৬, নভেম্বরে ৯০ ও ডিসেম্বরে ১০৮ জন মানুষ সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে ৯৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে, ৩১১ জনকে ময়মনসিংহে রেফার্ড করা হয়েছে ও ৯৯৬ জনকে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। রোগীর অবস্থা গুরুতর দেখে অভিভাবকরা ফুলপুরে কোন চিকিৎসা না নিয়ে সরাসরি ময়মনসিংহে নিয়ে গেছেন এরকমও আছে। তবে কোন মাসে কয়টি দুর্ঘটনা ঘটেছে তা জানা যায়নি।
উপজেলার পয়ারী দ্বিতীয় খণ্ড গ্রামের রাশিদুল ইসলাম আপেল বলেন, এর মধ্যে অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে শেরপুর রোডের বাঁশাটী, হরিণাদী, চানপুর, সাহাপুর ও মোকামিয়াসহ সড়কের বাঁক এলাকায়। এসব বাঁক সোজা করে দিলে সড়ক দুর্ঘটনা কিছুটা হ্রাস পাবে বলে তিনি মনে করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফুলপুর মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম সিরাজুল হক বলেন, অযোগ্য ও অনভিজ্ঞ চালক এবং অবৈধ (অটো, সিএনজি, রেগুনা ইত্যাদি) গাড়ির কারণেই এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়ক থেকে এসব দূর করতে না পারলে তা কমানো সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে ফুলপুর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক বলেন, ছোট গাড়ির জন্যই সাধারণত: দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। কারণ, তাদের তো কোন ট্রেনিং নেই। কাজেই দুর্ঘটনা কমাতে হলে সকল চালককে ট্রেনিংয়ের আওতায় আনতে হবে।
এ বিষয়ে ফুলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। লাইসেন্সবিহিন ও অবৈধ যানবাহন সড়কে নিষিদ্ধ করতে হবে। এছাড়া সবাইকে সড়ক আইন মেনে চলতে হবে। তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটা কমে আসবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন