শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় ভোগাই সেতুর দু'পাশে বালু উত্তোলন করায় সেতুটি হুমকিতে পড়েছে। যে কোন সময় সেতুটি ধসে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এমন অবস্থায় দ্রুত সেতুর কাছ থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা ২০১০ অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, সড়ক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারী স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু তোলা যাবে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর ১০০ থেকে ৪০০ মিটারের মধ্যে ৩০টির বেশি শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে সেতুর নিচের দুটি পিলারের কাছ থেকে দুই ফুট করে মাটি সরে গেছে। সেতুর পূর্ব পাশে রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের কালাকুমা এলাকায় ২৬টি আর পশ্চিম পাশে নয়াবিল ইউনিয়নের হাতিপাগাড় এলাকায় ৭টি শ্যালো মেশিনসহ মোট ৩৩টি মেশিন বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। পাইপ দিয়ে তা নদীর পাড়ে ফেলা হচ্ছে। সেই বালু ট্রাকে তুলে বিক্রির জন্য পাঠানো হচ্ছে। শতাধিক শ্রমিক এ কাজে ব্যস্ত। সেতুর এক কিলোমিটারের মধ্যে শ্যালো মেশিনগুলো বসানো হয়েছে। এতে ঝুঁকির মুখে পড়েছে সেতুটি। ভাঙন দেখা দিয়েছে ভোগাই নদের তীরে। এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে নয়াবিলের সঙ্গে রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের মধ্যে যাতায়াত ও সীমান্ত সড়কের সংযোগ স্থাপনের জন্য ১৫০ মিটার লম্বা নাকুগাঁও সেতু নির্মাণ করা হয়। গত বৈশাখ মাসে বালু তোলার জন্য ভোগাই নদীর চারটি মৌজা ৯০ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। পরে ইজারাদারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ নভেম্বর জেলা প্রশাসন বালু উত্তোলনের মৌজার পরিধি বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে নাকুগাঁও সেতুর উজান ও ভাটির দেড় কিলোমিটার মধ্যে বালু তোলার অনুমতি দেওয়া হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নয়াবিল ও রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের ১৫ থেকে ২০ জন বালু ব্যবসায়ী সেতুর ১০০ থেকে ৪০০ মিটারে মধ্যে দিন-রাত বালু উত্তোলন করছেন। বালু তোলার ফলে সেতুটি এখন ঝুঁকির মধ্যে আছে। তাঁরা সেতুরক্ষায় বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানান।
বালু ব্যবসায়ী নুর আলম জানান, সেতুর নিচ থেকে সবাই বালু তুলছেন। তাই তিনিও বালু তুলছেন।
নয়াবিল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো.আমজাদ হোসেন বলেন, সারা দিন বালু তোলায় শ্যালোমেশিনের শব্দে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। দিন-রাত বালু তোলায় ভোগাই নদের পাড় ও নাকুগাঁও সেতুটি হুমকির মুখে পড়েছে। যা আমাদের এলাকার জন্য হুমকি স্বরূপ। এ ব্যাপারে প্রশাসনের উদ্যোগ নেওয়াটা জরুরি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেলেনা পারভীন বলেন, নাকুগাঁও সেতুর উজান ও ভাটির দেড় কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এবং আমি যা দেখেছি এর মধ্যে কোনো মেশিন নাই।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল