বাগেরহাটে বিখ্যাত মুসলিম শাসক হযরত খানজাহানের (রহ.) বসতভিটা খননে পাওয়া প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী প্রদর্শনী মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় শেষ হয়েছে। বাগেরহাট সদর উপজেলার সুন্দরঘোনা গ্রামে হযরত খানজাহানের (রহ.) বসতভিটা চত্বরে গত শুক্রবার থেকে শুরু হয় এই প্রদর্শনী।
প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতা জানান, প্রায় সাড়ে ৬০০ বছর আগে হযরত খানজাহানের (রহ.) খলিফাতাবাদ নামে বর্তমান বাগেরহাট শহরতলীতে একটি শহর প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ষাট গম্বুুজ মসজিদসহ বাগেরহাটের অনেক বিখ্যাত স্থাপনা তার হাতেই তৈরি। এখানে তার বসভিটাও ছিল। বিশ্ব ঐতিহ্য বা ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজের অংশ। বিশ্ব ঐতিহ্যের মসজিদের শহর বাগেরহাটে হযরত খানজাহানের (রহ.) বসতভিটায় ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর মাসে খনন কাজ করে প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর।
খননকালে ইটের দেয়াল, চুন সুরকির মেঝে, পানি নির্গমন নালা, ব্রীত সলিং, পাথওয়ে, পোড়ামাটির তৈজসপত্র, হাড়ি, ঘট, থালা, বাটি, পিরিচ, কলমের ভগ্নাংশ, তৈল প্রদীপ, অলংকৃত ইট, পোড়ামাটির গুটিকা, পোড়ামাটির বল, কাচের চুড়ি, গ্লেইজডওয়ার, টালি, প্রদীপদ্বানী, নল, সিড়ি, পায়ে চলার পথ, জালের গুটি, পোড়ামাটির পুতি, লাল, কালো ও ধূসর বর্ণের মৃৎপাত্র পাওয়া যায়।
হযরত খানজাহানের (রহ.) বসতভিটা খননে পাওয়া প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শন মানুষকে দেখার সুযোগ করে দিতে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঁচ দিনব্যাপী প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে এই প্রদর্শনী। হযরত খানজাহানের (রহ.) বসত ভিটা খননে পাওয়া প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো নথিভুক্ত শেষে জাদুঘরে প্রদর্শন ও গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে।
প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর বাগেরহাটের কাস্টোডিয়ান মো. যায়েদ জানান, হযরত খানজাহানের (রহ.) বসতভিটা খননে পাওয়া প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শন আমাদের অনেকে অজানা ছিল। এই খননের মাধ্যমে আমরা অনেক নতুন কিছু জানতে পেরেছি। প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শন নিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী প্রদর্শনীর মাধ্যমে অনেকে নতুন ঐতিহাসিক কিছু জানার ও দেখার সুযোগ পেয়েছেন। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রত্নতত্ত্ব প্রেমিরা খননকালে প্রাপ্ত প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখেছেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই