ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে উপকূলীয় জেলায়। সোমবার সকাল থেকে মাঝারি বৃষ্টির সঙ্গে বইছে দমকা বাতাস। ঘূর্ণিঝড় অশনি মোকাবেলায় দুপুরে জরুরি সভা করেছে বাগেরহাটের শরণখোলা’ মোংলা, রামপাল ও মেড়েলগঞ্জসহ ৯টি উপজেলা প্রশাসন।
সভায় দুর্যোগ পূর্ব ও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তত রাখা হয়েছে সুন্দরবনসহ জেলার ৩৪৪টি আশ্রয় কেন্দ্র। এদিকে, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে অশান্ত হয়ে উঠছে বঙ্গোপসাগর। আছড়ে পড়ছে বিশাল বিশাল ঢেউ। ঝড়ের পূার্বাভাস ও অশান্ত সাগরে টিকতে না পেরে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সুন্দরবন, শরণখোলা, বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য বন্দর কেবি ফিশারী ঘাট ও মোংলায় মাছ ধরা ট্রলার নিরাপদে ঘাটে ফিরে আসতে শুরু করেছে। এখনো বাগেরহাটের অনেক ফিশিং ট্রলার এখনো সাগরে রয়েছে। ওইসব সব ট্রলার সাগরে কিনারে অবস্থান নিয়ে মৎস্য আহরণ করছে বলে মৎস্য ব্যবসায়ী ও সুন্দরবন বিভাগ জানিয়েছে।
এদিকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা জানান, আবহওয়া বিভাগ বন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী সতর্ক দেখিয়ে যেতে বলায় এখনো বন্দরে এখনো পন্য ওঠানামার কাজ স্বাভাবিক রয়েছে। ৪ নম্বার সংকেত হলে মোংলা বন্দরে পন্য ওঠানামার কাজ বন্ধ করে দেয়া হবে। বন্দরের পশুর চ্যানেল নিরাপদ রাখতে বানিজ্যিক ও লাইটারসহ সব ধরনের জাহাজ সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। বর্তমানে বন্দর জেটি, আউটার এ্যংকরেজে ৪টি বানিজ্যিকসহ ৭টি জাহাজ অবস্থান করছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, সোমবার সকাল থেকে অশান্ত সাগরে টিকতে না পেরে সুন্দরবনের দুবলা, হিরন পয়েন্ট, কটকা কচিখালীর ছোট ছোট খালে অনেক ফিশিং ট্রলার আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। এখনো দুবলার চরের কাছাকাছি সাগরের নিরাপদ দূরত্বে থেকে বহু ট্রলার মাছ ধরছে। ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত বাড়লে অবকাঠামো দূর্বল থাকায় ৭টি বন অফিস ও টহল ফাঁড়ির লোকবল অন্য অফিসে সরিয়ে নেয়া হবে।
ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় জেলার ৯টি উপজেলায় মাঠের কয়েক হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন চাষীরা। এরমধ্যে শরণখোলা উপজেলায়ই ১৫ শ বিঘা জমিতে পাকা ধান রয়েছে। শ্রমিক সংকটে কারণে এসব পাকা ধান কাটতে পারছেন না বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
শরণখোলা উপজেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানান, শরণখোলায় মোট সাড়ে তিন শ’ সমুদ্রগামী ফিশিং ট্রলার রয়েছে। ঝড়ের পূর্বাভাস পেয়ে সমস্ত ট্রলার সাগর থেকে দুদিন আগেই উঠে এসেছে। ট্রলারগুলো রাজৈর মৎস্য অবরণ কেন্দ্রসহ বগী, তাফালবাড়ী, রাজেশ্বর, পূর্ব খোন্তাকাটা ও কুমারখালী ঘাটে নিরাপদে অবস্থান করছে।
সাউথখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের বগী, চালিতাবুনিয়া, সোনাতলা, খুড়িয়াখালী এলাকায় বেড়িবাঁধের বাইরে সহস্রাধিক পরিবার বসবাস করে। তারা ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম