ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা রাজাগাঁও ইউনিয়নের বড়দেশ্বরী হাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা সময় প্রধান শিক্ষককে মারধর করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ২ জনকে আটক করেছে রুহিয়া থানা পুলিশ। আজ রবিবার দুপুর ১২টায় সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউনিয়নের বড়দেশ্বরী হাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ পিয়ন ও অভিভাবক সদস্য একজনকে মারপিট করে আহত করা হয়েছে। একটি মোটরসাইকেলও জ্বালিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন ও দুইজন নারীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
সরেজমিনে ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির তথ্য সূত্রে জানা যায়, স্কুলের মাঠের পাশে ২৬.২৫ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছে বড়দ্দেশ্বরী গ্রামের মাইনুল। গত ২৬ মে সেই জমিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমানের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। উচ্ছেদের পরে স্কুলের জমি বেড়ার আওতায় নিয়ে আসার জন্য প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট।
আজ সকালে শ্রমিকদের নিয়ে বেড়া লাগাতে গেলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক, পিয়ন, ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য, শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। স্কুলের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, সকালে প্রধান শিক্ষক বাউন্ডারি ঘেরাও দিতে গেলে আমরা দেখতে যাই। সেই সময় অতর্কিত কয়েকজন স্যারের ওপর হামলা করে। আমরা বাধা দিতে গেলে আমাদের উপরও হামলা করে। এখন আমরা খুব ভয়ে আছি। অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য আতাউর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক ও শ্রমিকসহ আমরা বেড়া নির্মাণ করতে যাই। এ সময় মাইনুলসহ আরও কয়েকজন হামলা করে আমাদের উপর। আমার মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেয়। প্রধান শিক্ষক ও পিয়নকে মারধর করে। তারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফা কামাল বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতিতে আমরা কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বাউন্ডারি ঘেরা দিতে গেলে তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের উপরও হামলা করে। আমাকে মারধর করে। পরে এলাকাবাসী আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ বিষয়ে রুহিয়া থানায় আমি একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দেবাশীস দত্ত সমীর বলেন, হামলার ঘটনা শোনার পরেই আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। শিক্ষার্থীরা অনেক ভিত হয়ে ছিল। পরে পুলিশ এসে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা ম্যানেজিং কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এ মারামারির বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
রুহিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চিত্ত রঞ্জন রায় বলেন, মোবাইল ফোনে সংবাদ পাওয়ার পরে আমি নিজেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি। উপস্থিত ঘটনার সাথে জড়িত দুই নারীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর