শরীয়তপুরের সদর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় উপজেলার বিনোদপুরে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যার দিকে সদর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার এমদাত মাদবরের ওপর হামলা চালায় ৯ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার কোব্বাস আলী মাদবরের সমর্থকরা। এতে আহত অবস্থায় এমদাত বেপারীকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর জের ধরে মঙ্গলবার এমদাত মাদবরের সমর্থকরা কোব্বাস আলী মাদবরের সমর্থক সরোয়ার খার ওপরে হামলা করে। সরোয়ার খা ও তার ছেলে রবিনকে কুপিয়ে জখম করা হয়।
এছাড়া সরোয়ার খার বাড়িসহ বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। এ হামলায় সাতজন আহত হয়। হামলার খবরের পর পরই ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার কোব্বাস আলী মাদবরের নেতৃত্বে এমদাত মাদবরের সমর্থকদের বাড়িঘর ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় আরও তিনজন আহত হয়।
আহতরা হলেন-বিনোদপুর ইউনিয়নের ঢালী পাড়া গ্রামের আব্দলু জলিল বেপারী (৪২), মকফর বেপারী (৪৫), মোস্তাক বেপারী (৩৯), একই ইউনিয়নের খয়াতলা গ্রামের সরোয়ার খা (৫০), রবিন খা (২৫) ও স্বপন মাদবর (৪০)-সহ বেশ কয়েকজন।
খয়াতলা বাজার ব্যবসায়ী সাঈদ ফরাজী বলেন, আমাদের কি নিরাপত্তা আছে? বাজারে ব্যবসা করবো, তা দিনদুপুরে চোখের সামনে লুট হয়ে যায়। কিছু করার নাই। এখন আমরা বাজার ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এমন যদি হয় তাহলে ব্যবসা ছেড়ে দোকান বন্ধ করে চলে যেতে হবে। আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীরা চাই বাজারের নিরাপত্তা। আমাদের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের ওপরে হামলা যেন না হয়।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার কোব্বাস আলী মাদবর বলেন, চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সাকিদারের লোকজন আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ঘরবাড়ি লুট করে সব কিছু নিয়ে যায়। এছাড়া ১০ থেকে ১২ জনকে কুপিয়ে জখম করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুইজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সাকিদারের সমর্থক সফিজ উদ্দিন বেপারী বলেন, আমরা এই এলাকায় কোনো মারামারি চাই না। গত কয়েক বছর ধরে এই এলাকায় শান্তি বিরাজ করছে। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যায় এলাকার মুরব্বি এমদাত মাদবরের ওপর হামলা চালিয়ে এলাকার পরিস্থিতি অশান্তি করে কোব্বাস আলী মাদবরের সমর্থকরা। সকালে তারা আবার আমাদের সমর্থিত আব্দলু জলিল বেপারীর বাড়িতে হামলা চালায়। এতে তারা তিন ভাই গুরুতর আহত হয়। আমরা তাদের প্রতিরোধ করি।
পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, সকালে বিনোদপুরের মারামারির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মারামারি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এসময় ইটের আঘাতে কিছুটা আহত হয় এক পুলিশ সদস্য। এ ব্যাপারে এখনো কোনো অভিযোগ হয়নি। আমরা অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বিডি প্রতিদিন/এমআই