বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কাজলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভিজিডি কার্ডের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। দীর্ঘ ১৮ মাস পর উপকারভোগীরা জানতে পারেন তাদের নামে ভিজিডি কার্ড আছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ইউপির চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম অর্ধশতাধিক গরীবের ভিজিডি কার্ডের চাল আত্মসাতে করেছেন। ভিজিডি কার্ডের উপকারভোগীদের নামে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল উত্তোলন করা হয়েছে। কিন্তু ভিজিডি কার্ডের বিষয়ে কিছুই জানেন না কার্ডের উপকারভোগীরা। তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি কার্ড। তারা শুধু এটা জানেন যে, ভিজিডি কার্ডের জন্য তারা তাদের ছবিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে হস্তান্তর করেছিলেন।
উপজেলার কাজলা ইউপির টেংরাকুড়া গ্রামের কয়েকজন ভুক্তভোগী এ বিষয়ে মঙ্গলবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
অভিযোগকারীরা হলেন- কাজলা ইউপির টেংরাকুড়া গ্রামের করিম খানের স্ত্রী গোলাপি বেগম (কাজলা ইউপির ভিজিডি কার্ড নং ৭৩), মন্টু খানের স্ত্রী আরজিনা বেগম (কাজলা ইউপির ভিজিডি কার্ড নং ৭৮) শফিকুল ইসলামের স্ত্রী মোর্শেদা বেগম (কাজলা ইউপির ভিজিডি কার্ড নং ২০২), জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী নুরেদা বেগম (কাজলা ইউপির ভিজিডি কার্ড নং ৫০), আবুল কালামের স্ত্রী স্বপনা বেগম (কাজলা ইউপির ভিজিডি কার্ড নং ৫৯), সাইফুল খানের স্ত্রী চান বানু (কাজলা ইউপির ভিজিডি কার্ড নং ৬১), আলিম উদ্দিনের স্ত্রী স্বরভানু বেগম (কাজলা ইউপির ভিজিডি কার্ড নং ২০০), নব্বইয়ের চরের লেবু মিয়ার স্ত্রী স্বপনা খাতুন (কাজলা ইউপির ভিজিডি কার্ড নং ২০৩), বেড়াপাঁচবাড়িয়া চরের রাসেল মিয়ার স্ত্রী হিরা বেগম (কাজলা ইউপির ভিজিডি কার্ড নং ২০৭)।
অভিযোগকারী কাজলা ইউপির টেংরাকুড়া গ্রামের করিম খাঁনের স্ত্রী গোলাপি বেগম জানান, গত কয়েক মাস আগে তিনি ভিজিডি কার্ডের জন্য তার ছবিসহ ভোটার আইডিকার্ড ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন যে তার কার্ডটি পাস হয়নি। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে জানতে পারেন তার নামে প্রতিমাসে ভিজিডির চাল তোলা হচ্ছে। অথচ তিনি কার্ডটি হাতে পাননি।
একই গ্রামের অপর অভিযোগকারী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী নূরেদা বেগম বলেন, আমরা গরীব মানুষ, না খেয়ে থাকি। আর বড় লোকেরা আমাদের চাউল মেরে খায়। এর বিচার মানুষ না করলে আল্লাহ ঠিকই করবেন। আজ পর্যন্ত কোনও চাল সাহায্য পাইনি।
আরেক অভিযোগকারী একই গ্রামের আবুল কালামের স্ত্রী স্বপ্না বেগম বলেন, ভিজিডি কার্ডের জন্য আমি টাকাও দিয়েছিলাম। আজ পর্যন্ত টাকা ফিরে পাইনি। কতবড় বাটপার আবার আমার নামে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাউল মারে (মেরে) খাইছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কাজলা ইউপির চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি তো নতুন চেয়ারম্যান। এ কাজ সাবেক চেয়ারম্যানের হতে পারে। তবে তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর ৪ মাসের চাল তিনিই বিতরণ করেছেন বলে বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, এ বিষয়ে লিখিত একটি অভিযোগপত্র আমরা পেয়েছি। প্রাথমিক তদন্তে ভিজিডি কার্ডের সত্যতা নিশ্চিত হয়েছে। বিষয়টির সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডিপ্রতিদিন/কালাম