বগুড়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ১৩ হাজার মেট্রিক টন মাছ বেশি উৎপাদন হয়েছে। মাছ চাষে সফল এলাকা হিসেবে চিহ্নিত বগুড়ায় অতিরিক্ত উৎপাদিত মাছগুলো জেলার চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করা হয়। মাছের পাশাপাশি রেণু উৎপাদনেও দেখা দিয়েছে সাফল্য।
জানা যায়, ২৩ থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ শুরু হয়েছে। সারাদেশের মতো বগুড়াতেও পালিত হয় এই কর্মসূচি। এ বছর জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। শনিবার সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী বিভাগের বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।
বগুড়া জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়া জেলায় প্রায় ৬০ হাজারের মতো পুকুর রয়েছে। মাছ চাষি রয়েছে প্রায় ২৬ হাজার। জেলার মধ্যে কাহালু, দুপচাঁচিয়া, আদমদীঘি ও নন্দীগ্রাম উপজেলায় সবচেয়ে বেশি মাছের চাষ হয়ে থাকে। জেলার সিংহভাগ মাছ চাষ হয়ে থাকে কাহালু ও আদমদীঘি উপজেলায়। এই দুই উপজেলার মাছ চাষিরা অধিক পরিশ্রমী ও মেধা সম্পন্ন। সে কারণে জাতীয় পর্যায়ের পুরস্কারও প্রাপ্তি আছে দুই উপজেলায়।
বগুড়ায় প্রতি বছর যে পরিমাণ মাছ চাষ হয়ে থাকে তা স্থানীয়ভাবে চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয়ে থাকে। রেণু উৎপাদন হয়ে থাকে উল্লেখযোগ্যহারে। এক হিসেবে দেখা গেছে, ২০২০ সালে বগুড়া জেলার ১২ উপজেলায় মাছের চাহিদা ছিল ৭৪ হাজার ৪৭৯ মেট্রিক টন। সেখানে মাছের উৎপাদন হয় ৮৪ হাজার ৩১৯ মেট্রিক টন। এখানে উদ্বৃত্ত উৎপাদন হয়েছে ৯ হাজার ৮৪০ মেট্রিক টন মাছ। ২০২১-২২ সালে ৮৪ হাজার মেট্রিক টন মাছের চাহিদা থাকলেও সেখানে উৎপাদন হয়েছে ৯৭ হাজার মেট্রিক টন।
বগুড়া জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সরকার আনোয়ারুল কবীর আহম্মেদ জানান, নিরাপদ মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে মানুষকে সচেতন ও সম্পৃক্ত করতে এবারের জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন করা হচ্ছে। জেলা মৎস্য বগুড়ায় সারা বছরে মাছের লক্ষ্যমাত্রা ৮৪ হাজার মেট্রিক টন। তবে সেখানে উৎপাদন হয়েছে ৯৭ হাজার মেট্রিক টন। যার অধিকাংশই মিঠা পানির মাছ।
এর মধ্যে রয়েছে-পাবদা, রুই, কাতল, মৃগেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। বগুড়ায় সারা বছরে মাছের ১ লাখ ৩০ হাজার রেণু উৎপাদন হয়েছে। ফলে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে ভারতেও মাছের রেণু রপ্তানি করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। স্বাদের বিবেচনায় পুকুরের মাছের তুলনায় নদীর মাছের স্বাদ ভিন্ন। তবে প্রান্তিক অঞ্চলগুলোতে যেভাবে মাছ চাষির সংখ্যা বাড়ছে, তাতে করে অর্থনৈতিকভাবে তারা স্বাবলম্বী হতে পারবে বলেও জানান এই মৎস্য কর্মকর্তা।
বিডি প্রতিদিন/এমআই