বগুড়া সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। তবে কয়েকদিনে পানি বৃদ্ধির কারণে নদী এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলেও নদীর পানি আর বাড়েনি। গত দুইদিন ধরে পানি উচ্চতা একই মাপে থাকায় নদীর পানি এখন স্থিতিশীল রয়েছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ আগস্ট মঙ্গলবার থেকে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করে। গত ১০ সেপ্টেম্বর শনিবার যমুনা নদীর পানি ১৬.০০ মিটার অতিক্রম করে। ১১ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল ৬ টায় পানির উচ্চতা ছিল ১৬.০৮ মিটার এবং সন্ধ্যা ৬ টায় ছিল ১৬.১০ মিটার। যা অপরিবর্তিত থেকে সোমবার সকালেও ১৬.১০ মিটার রয়েছে। তাই বলা যায় যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল। কর্মকর্তরা বলছেন, ১৬.৭০ মিটার পর্যন্ত যমুনা নদীর পানির বিপৎসীমা ধরা হয়। এদিকে সারিয়াকান্দিতে কমতে শুরু করেছে বাঙালি নদীর পানি। গত ১০ সেপ্টেম্বর বাঙালি নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৪.৫২ মিটার। যা কয়েকদিনে কমে সোমবার সকাল ৯ টায় হয়েছে ১৪.১৩ মিটার। যমুনা নদীতে কয়েকদিনের পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার কিছু কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। পানিবন্দী হয়েছে উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের বেশ কিছু পরিবার। পানিতে আক্রান্ত হয়েছে নিম্ন এলাকার হাইব্রিড মরিচের ফসল। নিমজ্জিত হয়েছে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের স্থানীয় জাতের গাইঞ্জা ধানের বীজতলা। ডুবে গেছে উপজেলার চরাঞ্চলের বিশালাকার গো চারণভূমি এবং সবুজ ঘাস। কোথাও কোথাও গবাদিপশুর পানিবন্দী হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলার কুতুবপুর ইউপির ছোট কুতুবপুর গ্রামের মোশাররফ মিয়া জানান, প্রতিবছরই তাদের বাড়ীঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। কয়দিন ধরে বাড়িতে পানি উঠছে। বাথরুম, রান্নাঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধে আশ্রয় নিয়ে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ইউপির মহিষের বাথানের মালিক আমিরুল ইসলাম জানান, তার বাথানে প্রায় শখানেক মহিষ আছে। কয়েকদিনের পানি বৃদ্ধিতে কাঁচাঘাস ডুবে গেছে। তিনি এখন তার মহিষগুলোকে খৈল, ভুষি জাতীয় খাবার দিচ্ছিন। আর যেখানে কাঁচাঘাস পাওয়া যাচ্ছে সেখানে ছুটছেন।
বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান তাসকিয়া বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই সারিয়াকান্দির নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এ যাত্রায় যমুনার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা খুবই কম। দুই একদিনের মধ্যেই পানি কমতে শুরু করবে। রোববার ও সোমবার যমুনা নদীর পানি নতুন করে আরে বাড়েনি। একই পরিমাপে রয়েছে। নদী এলাকার নিম্নাঞ্চলের দুই একটি স্থানে পানি উঠেছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও তা মোকাবিলায় আমাদের সমস্ত রকমের প্রস্তুতি রয়েছে এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহযোগিতায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুদ আছে। উপজেলায় এখনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কোথাও কোন ক্ষয়ক্ষতি এখন পর্যন্ত হয়নি।
বিডি প্রতিদিন/এএম