লাকসামে পাহাড়িকা ট্রেনে কাটা পড়ে এক যুবক নিহত এবং সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টায় লাকসাম রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে উত্তর দিকে চার বন্ধুসহ হেঁটে যাচ্ছিল রফিকুল ইসলাম শান্ত (২৮)। তারা লেভেল ক্রসিংয়ে যাওয়ার আগেই জংশন থেকে হুইসেল বাজিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় মহানগর গোধূলি।
একই সময়ে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন স্টেশনে প্রবেশ করছিল। এ সময় অন্যরা লাইন থেকে নেমে যায়। কিন্তু মোবাইল ব্যবহার করতে থাকা শান্ত দু’টি ট্রেনের শব্দে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পাহাড়িকা ট্রেনের নিচে পড়ে চাকার সাথে আটকে যায়। পরে জংশন স্টেশনের দক্ষিণ প্রান্তে ট্রেন থামলে তার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ। দুই সন্তানের জনক রফিকুল ইসলাম শান্ত রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করত। সে লালমাই উপজেলার পেরুল পূর্বপাড়ার আবুল কালাম আজাদের ছেলে।
অন্যদিকে, রবিবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের ছাদ থেকে এক যুবক ও ২ কিশোরকে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে আবু সায়েম নামে এক যুবক নিহত ও সাদ (১৩) এবং পলাশ (১৬) নামে দুই কিশোর আহত হয়। আহত সাদ জানান, শনিবার কিশোরগঞ্জের কাটাখালি থেকে তারা তিনজন সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে করে চট্টগ্রাম যায়। রবিবার চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে তারা তিনজন একই ট্রেনের ছাদে উঠে পড়ে। এসময় আরও ২ জন দুর্বৃত্ত তাদের সাথে ছাদে উঠে। ট্রেন চলতে শুরু করলে ওই দু’জন তাদের কাছে টাকা দাবি করে।
এসময় তাদের কাছে কিছু নেই বলে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। লালমাই এলাকায় পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা একে একে তিনজনকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেয়। এতে আবু সায়েমের মৃত্যু হয় এবং সাদ ও পলাশের হাত ভেঙে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় হতাহতদের উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আবু সায়েম কিশোরগঞ্জের ধসুদল কাটাখালি এলাকার স্বপ্ন মিয়ার ছেলে।
লাকসাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন খন্দকার ও উপপরিদর্শক আবুল হোসাইন জানান, লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা ও অপর একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক