কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে শিশু ধর্ষণ মামলায় জনি (৩৪) নামে এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ এক লক্ষ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এদিকে অস্ত্র মামলায় অপর এক যুবকের ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে।
সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম জনাকীর্ন আদালতে দন্ডপ্রাপ্ত আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার হাফিজুল প্রামানিকের ছেলে মো: জনি (৩৪)। আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১২ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টার সময় দৌলতপুর উপজেলার ফিলিফনগর গ্রামের মাঠে গোলাবাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণীর এক ছাত্রীকে (৭) ঘাস কাটার সময় আসামী জনি ফুসলিয়ে পাশ^বর্তী তামাক ক্ষেতের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় আক্রান্ত শিশুটির চিৎকার চিৎকার শুনে অপর দুই শিশু এবং মাঠে কর্মরত অন্যান্য চাষীরা ছুটে আসলে আহত শিশুটিকে তামার ক্ষেতের মধ্যে ফেলে রেখে ধর্ষক জনি পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই দিনই নির্যাতনের শিকার ওই শিশুটির পিতা বাদী হয়ে একমাত্র আসামী জনির নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ দৌলতপুর থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক শরিফুল ইসলাম আসামী জনির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) এ্যাড. আব্দুল হালিম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে দৌলতপুর থানায় অস্ত্র মামলায় এক যুবকের দশ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালত ও স্পেশাল ট্রাইবুনাল-২ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। কারাদন্ডাদেশ প্রাপ্ত মো. লিটন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার বাহিরমাদি পূর্বপাড়া এলাকার মো. মকবুল সরদারের ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানা পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে উপজেলার বাহিরমাদি পূর্বপাড়া এলাকায় রোকনুজ্জামানেরর দোকানের সামনে পৌঁছালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসা দুজন যুবক পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় এক যুবক পালিয়ে গেলেও পুলিশ মো. লিটনকে আটক করে এবং তার দেহ তল্লাশী চালিয়ে একটি কালো রংয়ের বিদেশী পিস্তল, ৪ রাউন্ড গুলিও ২ টি ম্যাগজিন উদ্ধার করে। পরে দৌলতপুর থানার উপ-পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ পরিদর্শক গৌতম কুমার মন্ডল।
কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের কৌসুলি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানান, দৌলতপুর থানার অস্ত্র মামলায় আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বাক্ষ্য শুনানি শেষে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামিকে কারাদণ্ডের এ আদেশ প্রদান করেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম