চাঁদপুরে কয়েকদিন ধরেই বেড়েছে ইলিশের আমদানি। স্থানীয় জেলেদের জালে ইলিশ কম ধরা পড়লেও সাগর অঞ্চল থেকে প্রতিদিন আমদানি হচ্ছে ৮০০-৯০০ মন ইলিশ। ক্রেতাদের অভিযোগ, আমদানি বাড়লেও কমেনি দাম। আড়ৎদাররা বলছেন ইলিশের আমদানি অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক কম। এমনকি ভারতে রপ্তানির হওয়ায় দাম একটু বেশী।
ব্যবসায়ী হাজী আব্দুল মালেক খন্দকার বলেন, দীর্ঘদিন জেলেদের জালে ইলিশ ধরা না পরায় জেলে ও আড়তদাররা হতাশ। তবে গত ৪ থেকে ৫দিন ঘাটে ইলিশের আমদানি কিছুটা শুরু হয়েছে। এতে করে চাঁদপুর মাছঘাটে আড়তদার ও শ্রমিকদের ব্যস্ততা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন চাঁদপুর মাছঘাটে এক হাজার মন ইলিশ আমদানী হচ্ছে। যদিও ইলিশের বৃহৎ মৎস্য অবতরন কেন্দ্র চাঁদপুর মাছঘাটের অধিকাংশ ইলিশ হাতিয়া, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী ও লক্ষীপুর থেকে আসে। এই বাজারে প্রতিদিনই ইলিশের আমদানি কিছুটা বাড়ছে। আগামী ১০ থেকে ১৫দিন ইলিশের আমদানি আরও বাড়বে বলে ধারণা করছেন। বর্তমানে চাঁদপুরে ৫০০ গ্রাম থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি , ৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি এবং দেড় কেজি থেকে ২ কেজি ওজনের ইলিশ ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতা মোকাদ্দেস মাহী বলেন, ইলিশের মওসুম হওয়ায় ঢাকা, কুমিল্লা, নোয়াখালি, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মাছ কিনতে চাঁদপুর আসছেন অনেক ক্রেতা। তাদের অভিযোগ- ইলিশ আমদানি বাড়লেও দাম কমেনি। তাছাড়াও চাঁদপুরের বাজারে বিক্রেতারা ইলিশের দাম বেশি হাঁকছেন।
জেলা মতস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত বলেন, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ কম ধরা পড়ছে। বিদেশে রপ্তানীর কারণেও দামটা একটু বেশী। চাঁদপুর মাছ ঘাটে সাগর অঞ্চল থেকে প্রতিদিন ৮/৯ শত মণ ইলিশের আমদানি হচ্ছে। চাঁদপুরে ছোট বড় ২৫টি মৎস্য আড়ত রয়েছে।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষনা কেন্দ্রের ইলিশ গবেষক আশ্রাফুল আলম বলেন, বর্তমানে সমুদ্রে ৬৫দিনের অভয়াশ্রম কর্মসূচি বাস্তবায়ন হওয়ায় ইলিশের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এখন যে হারে ইলিশ ধরা পড়ছে তাতে ধারণা করা যাচ্ছে সরকারি বিভিন্ন অভয়াশ্রম কর্মসূচিগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। এই কর্মসূচীগুলোর সফল বাস্তবায়নের ফলে ইলিশের ধারাবাহিক উতপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় বিভিন্ন সাইজের প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে। গত বছর সারাদেশে ৫ লাখ ৬৫হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। বিগত বছরগুলোর তুলনায় ধারাবাহিকভাবে এবছরও ১০ থেকে ১৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই গবেষক।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ