এ অঞ্চলে প্রাকৃতিক দূর্যোগ না থাকায় এবার আগাম জাতের ধান দিনাজপুরে ভাল হয়েছে। এরই মধ্যে আগাম জাতের ধান কাটা-মাড়াই শুরু করেছে কৃষক। আর এই আগাম জাতের ধান কাটায় খাদ্য চাহিদা পূরণ, বাজারে অধিক মূল্য ও কাঁচা খড় বিক্রিতে অধিক দামের মাধ্যমে কৃষকরা ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন। আবার এই ধান কাটার পরে ওই জমিতে শীতকালীন শবজি রোপনের প্রস্তুতি নিয়ে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কৃষকরা বলেন, আগাম জাতের ধান ঘরে তুলতে পেরে খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাজারে ৮-৯শ টাকা মন দরে কাঁচা ধান বিক্রি করতে পারছেন। ধানের কাঁচা খড় গো-খাদ্য হিসাবে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তারা আরো বলেন, প্রতি বিঘার কাঁচা খড় ৪-৫ হাজার টাকা দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া একই জমিতে আবার আলু, সরিষা ও ফুলকপিসহ শীতকালীন বিভিন্ন প্রকার শবজি রোপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এদিকে, বিরামপুরের হরেকৃষ্টপুর নাপিতপাড়া গ্রামের কৃষক লাবিবুর রহমান জানান, তিনি প্রায় চার বিঘা জমিতে আগাম জাতের আমন রোপন করেন। তিনি বিঘা প্রতি ১৪ -১৬মন হারে ফলন পেয়েছেন।
হাবিবপুর গ্রামের তমিজ উদ্দিন জানান, তিনি ৩ বিঘা জমিতে আগাম জাতের আমন রোপন করেছেন। তিনি বিঘা প্রতি বিঘা জমি থেকে ১৫-১৭ মন হারে ফলন পেয়েছেন।
বিরামপুরের হাবিবপুর বাজারের ধান ব্যবসায়ী জিয়া হোসেন জানান, তিনি সদ্য মাড়াই করা কাঁচা ধান ৯০০ টাকা করে ক্রয় করেছেন।
বিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নিকছন চন্দ্র পাল জানান, বিরামপুর উপজেলায় এবার ১৭ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে আমন রোপন করা হয়। এর মধ্যে ১ হাজার বা ১১ হাজার ২৫০বিঘা উচু শ্রেনির জমিতে আগাম জাতের আমন ধান রোপন করা হয়েছে। অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আগাম জাতের আমন ধান কাটা শুরু হয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৪শ বিঘা জমির ধান কাটা হয়েছে। আমনের অন্যান্য ধানের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে গুটি সর্না, সর্না-৫, ব্রি-৩৪, ৫১, ৭১, ৭৫, হাইব্রিড ও বিনা-১৭.২০ জাত।
তিনি আরও জানান, কৃষকদের আগাম আমন ধান ও শীতকালীন ফসল আবাদে সহায়তা, লাভজনক, রোগ-বালাই ও দূর্যোগ প্রতিরোধে দিক নির্দেশনা মূলক পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবছর দিনাজপুর জেলায় ২লাখ ৬০ হাজার জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও, চাষ বেশী হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ ফলনশীল, হাইব্রিড ও সুগন্ধি জাতের ধান।
বিডি প্রতিদিন/এএ