দেশের সরকার ও মৎসবিভাগ ষোষিত গত ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এ ২২ দিন ছিল দেশের নদ-নদীতে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ।
নিষেধাজ্ঞার পর গত কয়েকদিন থেকে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদে ধরা পড়ছে ইলিশ। তবে স্ত্রী ইলিশ ধরা পড়লেও তাদের ডিম ছেড়েছে এবং পুরুষ ইলিশ ধরা পড়ছে বেশি বলে জানায় জেলা মৎস্য বিভাগ।
এবার বিগত বছরগুলোর চেয়ে জেলার নদ-নদীতে ইলিশের বিচরণও যেমন বেশি তেমনি আকারও অনেক বড় বলে জেলেরা জানিয়েছেন।
গত ২০১৭ সালে কুড়িগ্রাম জেলাকে ইলিশ জোনভুক্ত ঘোষণা করে সরকার। এ জেলায় সচরাচর ইলিশ না মিললেও নিষিদ্ধ সময়ে জেলার নদ-নদীতে বিশেষ করে বৃহৎ ব্রহ্মপুত্র নদে এ ইলিশের দেখা মিলত। সরকারঘোষিত নিষিদ্ধ সময়ে ভাটির নদ-নদীতে জাল ফেলা বন্ধ থাকায় উজানের দিকে আসার সুযোগ পায় ইলিশগুলো। ফলে এ বছরেও নিষেধাজ্ঞা থাকা ও জেলেরা মাছ শিকার না করায় এবার ইলিশের বিচরণ বেড়েছে।
জেলার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লারহাট বাজারে ব্রহ্মপুত্রে শিকার করা ইলিশ বিক্রি করতে আসেন নুরনবী নামের এক জেলে। তিনি বলেন, ‘গত কয়েদিন থাকি ইলিশ ধরি আসছি। সবচেয়ে গত শনিবার সন্ধ্যায় ২৫ কেজি ইলিশ মারি বেচাইচি। ইলিশগুলি এবার সাইজ খুব বড়। পেত্যেকটা (প্রতিটি) কেজি থেকে কেজির ওপর হইচে। কিন্তু মাছত ডিম আছিল না।’
উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের জেলে আছির উদ্দিনের বলেন, ‘এবার ভালোই ইলিশ পাওয়া যাইতাছে। গতকাইল থাকি নদীতে পানি একটু বাড়ছে। এজন্য মাছ একটু কম পাইছি। কিন্তু ইলিশ পাওয়া যাইতাছে।’
জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, সাধারণত কুড়িগ্রামে ইলিশ পাওয়া যায় না। উজান থেকে ভাটিতে যেগুলো আসে জেলেরা নিষেধাজ্ঞার সময়ে তা নিধন বন্ধ রাখায় এবার জেলার ব্রহ্মপুত্র নদে ইলিশের বিচরণ ঘটেছে। উপকূলীয় অঞ্চল থেকে কুড়িগ্রামের নদ-নদীতে ইলিশ আসতে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। এই দীর্ঘ পথে নদ-নদীতে জাল কিংবা নাব্য সংকটে আরো সময় লাগে ইলিশের। এ কারণে নিষেধাজ্ঞার প্রথম দুই সপ্তাহ ব্রহ্মপুত্রে ইলিশের বিচরণ কম থাকলেও শেষের দিকে তা বাড়তে থাকে।
এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, এ বছর ব্রহ্মপুত্রে ইলিশের বিচরণ তুলনামূলক বেড়েছে। গত ২২ দিনের অভিযানে আমরা যেসব ইলিশ জব্দ করেছি সেগুলোর বেশিরভাগই ছিল পুরুষ ইলিশ। আর যে কয়েকটি স্ত্রী ইলিশ পাওয়া গেছে সেগুলোর বেশির ভাগই ছিল ডিম ছেড়েছে। তবে তিনি বলেন, পুরুষ ইলিশ এ অঞ্চলে বেশি দেখা গেলেও স্ত্রী ইলিশগুলো নেই কেন তা রীতিমত গবেষণা হওয়া দরকার।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ