ফেনীর পরশুরামে বিএসএফ এর গুলিতে নিহত কৃষক মেজবাহর লাশের অপেক্ষায় সীমান্তের কাঁটাতারের দিকে তাকিয়ে আছে তার স্বজনরা। ১১ দিনেও মেজবাহর লাশ ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বুঝিয়ে না দেয়ায় স্বজনরা ছুটছেন বিভিন্ন জনের দ্বারে-দ্বারে। এদিকে বিজিবি বলছেন, এখন পর্যন্ত লাশ হস্তান্তরের কোনো চিঠি পাননি তারা।
গত ১৩ নভেম্বর বিকেলে জেলার পরশুরামের বাঁশপদুয়া গ্রামের ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ধান কাটতে যান কৃষক মেজবাহ উদ্দিন। এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ তাকে জোর করে ধরে নিয়ে যায়। মেজবাহকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর তার স্বজনরা মৌখিকভাবে পুলিশ ও বিজিবিকে ঘটনাটি জানান। এর তিনদিন পর ভারত সীমান্তের একশ গজের মধ্যে কাঁটাতারের পাশে তার লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে তারা লাশটি মেজবাহর বলে শনাক্ত করেন। পরবর্তীতে বিজিবি ও বিএসএফএর পতাকা বৈঠক শেষে মেজবাহর লাশ নিয়ে যায় বিএসএফ। সকল আইনি পদক্ষেপ শেষে বিএসএফ লাশ ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও ১১ দিনেও মেজবাহর লাশ ফেরত দেয়নি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। লাশ না পেয়ে ১১টি দিন আর্তনাদ চলছে তার পরিবারে।
তারা জানান, বিএসএফ জঘন্যভাবে মেজবাহকে হত্যা করেছে। হত্যার পর সীমান্তে তার লাশ ফেলে চলে যায়। পরবর্তীতে বিএসএফ ময়নাতদন্ত শেষে লাশ ফেরত দিবে এমন কথা বলে আজ ১১ দিনেও লাশ ফেরত দেয়নি। আইন আদালতের মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনার সঠিক বিচার চায় তার পরিবার। পরিবার ও স্বজনের প্রশ্ন কী অপরাধ করেছে মেজবাহ? কেন এভাবে নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে? কেন তার লাশ দিতে টালবাহানা করছে ভারতীয় বাহিনী বিএসএফ?
ফেনী ৪ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম আরিফুল ইসলাম বলেন, ভারতের সকল আইনি পদক্ষেপ শেষে হয়তো লাশ ফেরত দেবে।
মেজবাহর বোন পারুল আক্তার বলেন, মেজবাহর ছোট্ট-ছোট্ট চার কন্যা সন্তান রয়েছে। তারা পিতাকে শেষ নজর দেখার অপেক্ষায় রয়েছে।
মেজবাহর স্ত্রী মরিয়ম আক্তার বলেন, ছোট ছোট শিশু কন্যাদের নিয়ে তিনি খুবই কষ্টে আছেন। তিনি যে কোন মূল্যে স্বামীর মৃতদেহ ফেরত চান। তিনি বলেন, আমার স্বামী সাধারণ কৃষক। তিনি কোনো অন্যায় কাজ বা অবৈধ কাজের সাথে কোনোদিন সম্পৃক্ত ছিলেন না। এ ঘটনা কিছুতেই মেনে নেয়ার মতো নয়। তিনি এর বিচার চান ও তার স্বামীর লাশ ফেরত চান।