২০ মার্চ, ২০২৩ ১৯:৪৬

শিবচরে দুর্ঘটনায় ইমাদ পরিবহনের বিরুদ্ধে মামলা, নানা অভিযোগ

মাদারীপুর প্রতিনিধি

শিবচরে দুর্ঘটনায় ইমাদ পরিবহনের বিরুদ্ধে মামলা, নানা অভিযোগ
পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুরের শিবচরে ইমাদ পরিবহন দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহতের ঘটনায় বাস কোম্পানিকে অভিযুক্ত করে শিবচর থানায় মামলা করেছে হাইওয়ে পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে শিবচর হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট জয়ন্ত সরকার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সড়ক পরিবহন আইনে মামলাটি রুজু করা হয়। 
 
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো.মাসুদ আলম বলেন, বাস কোম্পানিকে অভিযুক্ত করে হাইওয়ে পুলিশ মামলা করেছে। বাসটির চালক, সুপার ভাইজার, সহকারী দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার কারণে মামলা থেকে তাদের রেহাই দেয়া হয়েছে। বাসটি একটি কোম্পানির অধিনে পরিচালিত হতো, তাই নির্দিষ্ট কারো বিরুদ্ধে মামলা না করে কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে কার কি দায় সেটা বের করবে। এদিকে দুর্ঘটনা কবলিত বাসটির বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
 
সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার ভোররাতে খুলনা থেকে যাত্রী বোঝাই করে ইমাদ পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা-মেট্রো-ব-১৫-৩৩৪৮) ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। বাসটি গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া থেকে ১৫ জন যাত্রী তুলে। পদ্মাসেতুর আগে ঢাকা-খুলনা এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর সিমানা এলাকায় আসলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। বাসটি এক্সপ্রেস হাইওয়ের নীচের আন্ডারপাসের গাইড ওয়ালের সাথে ধাক্কা লেগে দুমড়ে মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ১৪ জন নিহত হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর আরো ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
 
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ইমাদ পরিবহনের যে বাসটি দুর্ঘটনা কবলিত হয়েছে সেই বাসের রুট পারমিট স্থগিত ছিল। ছিল না ফিটনেস সার্টিফিকেট। ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বালুবোঝাই ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয় ইমাদ পরিবহনের এই বাসটি।এতে তিন যাত্রী প্রাণ হারায়। আহত হয়েছিল ৮ জন। এরপর ওই গাড়ির কাগজপত্রের অনুমোদন স্থগিত করা হয়। সবশেষ গত ১৮ জানুয়ারি ওই বাসের গাড়ির ফিটনেস সনদের মেয়াদও উত্তীর্ণ হয়। তবে চলাচল নিষেধাজ্ঞা থাকায় মালিকরা বাসের ফিটনেস নবায়ন করেননি। এছাড়াও কয়েক মাস আগে একই কোম্পানির অন্য আরেকটি বাস মাদারীপুরের শিবচরে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে কমপক্ষে তিনজনের প্রাণ নেয়। সেই ঘটনায় শিবচর থানায় মামলাও হয়, কিন্তু রহস্যজনক কারণে মামলা তুলে নেয় নিহতের পরিবার। বিআরটিএ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালে ভারতের অশোক লেল্যান্ড ব্র্যান্ড এই বাসটি তৈরী করে। নিবন্ধন নেওয়া হয় ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী বাসটি ৪০ আসনের। দুর্ঘটনা কবলিত বাসটির কোনো ফিটনেস সার্টিফিকেট দেখাতে পারেননি বলে জানিয়েছেন শিবচর হাইওয়ে থানার ওসি আবু নাঈম মোহাম্মদ মোফাজ্জেল হক। 
 
তিনি জানান, নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। বাসটির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিক ছিলো না বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়।
 
বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর