২২ মার্চ, ২০২৩ ১৯:৩৬

মর্টারশেলকে গুপ্তধন ভেবে খুলতে গিয়ে বিস্ফোরণ, যুবকের পা বিচ্ছিন্ন

অনলাইন ডেস্ক

মর্টারশেলকে গুপ্তধন ভেবে খুলতে গিয়ে বিস্ফোরণ, যুবকের পা বিচ্ছিন্ন

বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত রান্নাঘর।

কুড়িয়ে পাওয়া পরিত্যক্ত মর্টারশেল বিস্ফোরণে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় হামিদুল ইসলাম বাবু মিয়া (৪০) নামের এক যুবকের ডান পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিস্ফোরণে বাবু মিয়া আহত দেওয়ানের খামার গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় মিস্ত্রি বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দেওয়ানের খামার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভূরুঙ্গামারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোর্শেদুল হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বাবু মিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন‍্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

স্থানীয়রা জানায়, মাটি কাটার কাজ করে বাবুর মামা আব্দুল গফুর। একই গ্রামের আজিজ কমান্ডারের বাড়ির পাশে পুকুরের মাটি কাটার সময় একটি ভারি লোহার বস্তু পায় আব্দুল গফুর। পরে সেটাকে গুপ্তধন ভেবে গোপনে এনে বাবুকে দেন তিনি। মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাবু তার নিজ বাড়ির রান্না ঘরের দরজা বন্ধ করে রাইস কুকারের লাইন থেকে বিদ‍্যুৎ সংযোগ নিয়ে লোহা কাটার গ্রান্ডার মেশিন দিয়ে মর্টার শেলটি কেটে গুপ্তধন বের করতে গেলে সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। মর্টারশেলটি বিস্ফোরিত হয়ে রান্না ঘরের টিনের বেড়া ছিড়ে লোহার গেট ফুটো করে পার্শ্ববর্তী ফিলিং স্টেশনের বাউন্ডারি ওয়ালে গিয়ে পড়ে। এতে বাবুর ডান পায়ের গোড়ালিসহ হাঁটুর কাছাকাছি পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এবং অপর পা ঝলসে যায়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। এই ঘটনার পর থেকে বাবুর মামা গফুর পলাতক রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মর্টার শেলটি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ের।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভূরুঙ্গামারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোর্শেদুল হাসান জানান, মর্টারশেলটি বিস্ফোরণে রান্নাঘরের টিনের বেড়াসহ স্থানীয় একটি বাউন্ডারি দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রান্নাঘরের মেঝেতে হাতুড়ি, কুড়াল ও দা পড়ে থাকতে দেখা গেছে। সম্ভবত গুপ্তধনভেবে মর্টারশেলটি খুলতে চেষ্টা করায় আঘাতে এটি বিস্ফোরিত হয়েছে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, মর্টারশেলটি মুক্তিযুদ্ধকালের। এটি অবিস্ফোরিত ও পরিত্যক্ত অবস্থায় মাটির নিচে ছিল। তবে এটি তাজা থাকায় আঘাতে বিস্ফোরিত হয়েছে। এ ঘটনায় ভূরুঙ্গামারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর