মাদারীপুরের শিবচর পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ রায়কে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ১৮ জুন শিবচর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিব ঢালী ও সাধারণ সম্পাদক আসিফ মাদবর স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে সৌরভ রায়কে বহিষ্কার করা হয়। একই সাথে পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিমুল বেপারীকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। তবে বিষয়টি জানাজানি হয়েছে সোমবার (২৬ জুন) থেকে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শিবচর পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ রায় ছাত্রলীগের ব্যবহার করে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েন। সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতার ভাতিজিকে নিয়ে উধাও হয়ে যান তিনি। এরপরেই নড়েচড়ে বসে উপজেলা আওয়ামী লীগ। উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সিদ্ধান্তে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রলীগ নেতা জানান, সৌরভ রায় সম্প্রতি এক তরুণীকে নিয়ে উধাও হয়ে যান। তরুণী ভিন্ন ধর্মের হওয়ায় দলীয় চাপে তিনি সেই তরুণীকে ফিরিয়ে দেন। এছাড়াও শিবচরের ভদ্রাসন স্কুলের এক শিক্ষকের মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেণ এবং ওই তরুণীকে ব্লাকমেইলের মাধ্যমে কয়েক লাখ টাকা আদায় করেন। ওই তরুনী প্রতিবাদ করলে তাকে প্রচন্ডভাবে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করেণ সৌরভ।
সেই ঘটনায় শিবচরের এক প্রভাবশালী নেতার কাছে বিচার দেন নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী। এছাড়াও সৌরভ দলীয় পদ পদবী ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদের মালিক বনে যান অল্পদিনেই। ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহারের জন্য ক্রয় করেন বিলাস বহুল গাড়ি। এছাড়াও গত কয়েক বছরে একাধিক ব্যক্তিকে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে। প্রভাবশালী হওয়ায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মামলাও হয়নি।
সৌরভের নির্যাতের শিকার হয়েছেন শিবচর পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হোসেন মোল্লা। তিনি জানান, সৌরভ আমাকে মারধর করে পা ভেঙ্গে দিয়েছে। আমাকে রক্তাক্ত করেছে। পরে আমার স্ত্রী আমাকে রক্ষা করতে আসলে তাকেও মারধর করেছে। এই ঘটনায় আমি বিচার পাইনি। আমি বিচার চাই।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন সৌরভ রায়। তিনি বলেন, এসব ষড়যন্ত্র। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে ভালোবাসি। এই কারণে একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
তবে এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও উপজেলা ছাত্রলীগ নেতারা প্রকাশ্যে কথা বলে রাজি হননি। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন অনেক জানান, কি কারণে বহিষ্কার করা হয়েছে বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নতুন একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ