২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১৭:৫১

মায়ের লাশ দেখতে ইতালি থেকে ফিরছিলেন ছেলে, সড়কে নিহত

নরসিংদী প্রতিনিধি

মায়ের লাশ দেখতে ইতালি থেকে ফিরছিলেন ছেলে, সড়কে নিহত

নরসিংদীর শিবপুরে ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর তোলা ছবি

মায়ের মরদেহ দেখা হলো না ইতালি প্রবাসী ছেলের। শেষবারের মতো মাকে দেখতে ইতালি থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন ছেলে শাহ আলম। কিন্তু বিধিবাম। বিমানবন্দর থেকে বাড়ি যাবার পথে সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নেয় প্রবাসী ছেলের প্রাণ।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নরসিংদীর শিবপুরে ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনি ও তার ছোট বোনজামাই নিহত হন। আহত হন নিহতের ভাগ্নে।

নিহতরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকার শাজাহান মেম্বারের ইতালি প্রবাসী ছেলে শাহ আলম (৬২) ও একই এলাকার শামসু উদ্দিন মিয়ার ছেলে ও নিহতের ছোট বোনজামাই সেলিম মিয়া (৪৫)।

পুলিশ  ও নিহতের স্বজনরা জানান, মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে দীর্ঘদিন পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকার ইতালী প্রবাসী ছেলে শাহ আলম (৬২) আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশে আসেন। ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে আনতে ছোট বোনজামাই সেলিম ও ভাগ্নে সাব্বির সকালে একটি নোয়া মাইক্রোবাস নিয়ে এয়ারপোর্টে যায়। সেখান থেকে শাহ আলমকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফিরছিল। সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর শিবপুরের পুকুর পাড় এলাকায় পৌঁছালে বিপরিত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। ওই সময় ঘটনাস্থলে তিনজন গুরুতর আহত হয়। পরে পুলিশ, ফায়রা সার্ভিস ও স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে সেলিমের মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইতালি প্রবাসী শাহ আলমের মৃত্যু হয়।

দুর্ঘটনা কবলিত মাইক্রোবাস থেকে বেঁচে যাওয়া নিহতের ভাগ্নে সাজেদুর রহমান সাব্বির বলেন, ‘দুর্ঘটনায় আমার মামা ও খালু দুই জন মারা যায়। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭ টায় আমার নানু ও ইতালি প্রবাসী শাহ আলমের মা মারা যান। বৃহস্পতিবার দুপুরে তার জানাজা ছিল। এই খবর পেয়ে রাতের ফ্লাইটে মামা বাংলাদেশে আসেন। বৃহস্পতিবার তাকে এয়ারপোর্ট থেকে আনতে যাই। সেখান থেকে তাকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে এই দুর্ঘটনা।’

নিহতের ভাতিজা বায়জিদ বলেন, ‘দাদীকে দেখতে দেশে এসেছিলেন চাচা। কিন্তু দাদীকে শেষবারের মতো আর দেখতে পারলেন না। অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে চাচাকে পৃথিবী ছাড়তে হলো।’

নরসিংদী ইটাখোলা হাইওয়ে ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক আরিফ বলেন, দুর্ঘটনার সময় বৃষ্টি হচ্ছিল। ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত গতির কারণে দুইটি যানবাহনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুইজন জন মারা যায়।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে জেলার মনোহরদী গরুর বাজার এলাকায় কভার্ডভ্যানের ধাক্কায় সোহাগ নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর