তীব্র দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। গরমে তৃষ্ণা মেটাতে বগুড়ায় সাদা দইয়ের চাহিদা বেড়েছে। সাদা দই বগুড়াবাসীর ঐতিহ্য। ক্লান্তি দূর করতে এ দইয়ের ঘোল খুব উপকারী ও পরিবারের সবার পছন্দের। গ্রীষ্মকালের শীতল খাবার হিসেবে এখনও শ্রেষ্ঠত্ব দখল করে আছে সাদা দই।
এদিকে গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে লোডশেডিং। বিদ্যুতের লোডশেডিং হওয়ায় অসহ্য গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। রাতের লোডশেডিং অসহনীয় হয়ে ওঠে। শুক্রবার বগুড়ায় তাপমাত্রা বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরমে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের কষ্ট চরমে পৌঁছেছে। বিদ্যুতের অভাবে সব কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটছে।
জানা যায়, চৈত্রের শেষের দিকে সারা দেশের মত বগুড়াতে টানা কয়েকদিনের তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষরা। গত বৃহস্পতিবার বগুড়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত চার দিন ধরে জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ। আগামী এক সপ্তাহ তাপমাত্রা আরো বাড়বে। চলতি মাসে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা পার হয়ে যাবে। বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছে তারা।
দাবদাহ বাড়ার কারণে বেড়েই চলছে কষ্টের মাত্রা। প্রচন্ড রোদে ঘর থেকে খুব কম সংখ্যক মানুষ বের হচ্ছে। গরমে কোথাও ঠাই মিলছে না। এই গরমে তৃষ্ণা মেটাতে অনেকেই সাদা দইয়ে কিনতে ভিড় করছেন। গরমে প্রচুর চাহিদার সৃষ্টি হয় সাদা দইয়ের। এদিকে বগুড়ায় গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পুকুরে ও নদীর পানিতে ভিজিয়ে থাকতে দেখা গেছে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সকল বয়সের মানুষদের।
বগুড়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান, দিন যতই যাচ্ছে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহ তাপমাত্রা আরো বাড়বে। চলতি মাসে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা পার হয়ে যাবে। গত বৃহস্পতিবার বগুড়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন বুধবার ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বগুড়ার দই ব্যবসায়িরা জানান, প্রচন্ড গরমে দইয়ের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। চাহিদামত দই সরবরাহ করা যায় না। প্রতিটি সাদা দইয়ের হাড়ি বিক্রি করা হয়ে থাকে ৮০ থেকে ১৫০ টাকায়। একদিকে রোজা আরেক দিকে প্রচন্ড গরম। এই গরমে রোজাদার ব্যক্তিগণ ঠান্ডা পানীয় খাবার খেতে চায় বেশি। সাদা দই দ্রুত শরীরকে ঠান্ডা করে। এই কারণে বগুড়ায় ইফতারে সাদা দইয়ের চাহিদা বেশি।
দই কিনতে বগুড়া সদরের হাফিজুল ইসলাম জানান, প্রচন্ড গরমে তৃষ্ণা মেটাতে সাদা দইয়ের স্বাদের বিকল্প নেই। পরিবারের সবার কাছে সাদা দই সবচেয়ে প্রিয়। সাদা দই দ্রুত শরীরকে ঠান্ডা করে। তৃষ্ণা মেটাতে খুব কার্যকরী এবং হজমে ভালো কাজ দেয়।
বগুড়া শহরের ভ্যানচালক আব্দুল জলিল প্রামানিক জানান, চৈত্রের এই তীব্র রোদের কারণে ভ্যান চালাতে কষ্ট হচ্ছে। এত গরম যে রাস্তায় দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। গরমের কারণে মানুষ কম বের হচ্ছে। তৃষ্ণা মেটাতে সাদা দই ও ঘোল অনেকটা শরীরের স্বস্তি ফিরে আনে। এ কারণে আমি প্রতিদিন সাদা দই কেনার চেষ্টা করি। বগুড়া শ্যামলী হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের জেনারেল ম্যানেজার জামিল খান জানান, বসন্তের শেষে তীব্র গরমে প্রভাব পড়েছে বগুড়ায়। যার ফলে সাদা দইয়ের চাহিদা আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। দুপুরের আগেই সাদা দই শেষ হয়ে যায়। চাহিদা মেটাতে দুধ বেশি ক্রয় করতে হচ্ছে। এছাড়া বাজারে অন্যান্য পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় দই চাহিদা মত সরবরাহ করা যাচ্ছে না।
বিডি প্রতিদিন/এএম