হবিগঞ্জ শহরে হজ যাত্রী ও বিদেশগামী শ্রমিকদের টিকিটের লাখ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে আরাফ ট্রাভেলসের মালিক নিয়াজ আহমেদ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা সময়মতো হজ্বের ভিসা ও শ্রমিকরা টিকিট না পেয়ে হতাশ। শহরের বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত আরাফ ট্রাভেলসে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটি তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পেয়ে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
নিয়াজ আহমেদ চুনারুঘাট উপজেলার বাসিন্দা। সে শহরের মোহনপুর এলাকায় একটি বাসা নিয়ে বসবাস করতো বলে জানা গেছে।
জানা যায়, নিয়াজ আহমেদ নামে ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন যাবত শহরের বাণিজ্যিক এলাকায় শংকরের মুখের সামনে আরাফ ট্রাভেলস নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে সাধারণ লোকজনের সাথে প্রতারণা করে আসছেন। গত বৃহস্পতিবার বেশ কিছু হজযাত্রী, শ্রমিকদের ভিসা ও টিকিট দেয়ার কথা থাকলেও সে ট্রাভেলসটি তালাবদ্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যায়। বন্ধ করে দেয় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও। যে কারণে তার সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ করতে পারছে না ভুক্তভোগীরা। যা নিয়ে শহরজুড়ে বইছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা।
একটি সূত্র জানায়, আরাফ ট্রাভেলসের মালিক নিয়াজ আহমেদ অন্তত অর্ধশতাধিক হজ যাত্রীর ভিসা প্রসেসিংয়ের টাকা ও বেশ কিছু বিদেশগামী শ্রমিকের টিকিটের লাখ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটি চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে হজ যাত্রী ও বিদেশগামীদের আকৃষ্ট করত। এরপর তাদের হাত থেকে টাকা নিয়ে ফেলা হতো ফাঁদে। প্রতিজন হজযাত্রীর কাছ থেকে সে ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছে। হবিগঞ্জ শহরের মোহনপুর, রাজনগর, শায়েস্তানগর, সিনেমাহলসহ গ্রামগঞ্জের অনেক লোকজন তার কাছে হজে যাওয়ার জন্য টাকা জামা দিয়েছিল বলে জানা গেছে।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলার হিলালপুর গ্রামের ওয়ারিশ মিয়ার ছেলে জুবায়েল মিয়া জানান, সম্প্রতি তিনি কাতারে যাওয়ার জন্য ভিসা পেয়েছেন। আর টিকিট করার জন্য তিনি আরাফ ট্রাভেলসএর মালিক নিয়াজ আহমেদের কাছে যান। টিকিটের জন্য তিনি ৪০ হাজার টাকা অগ্রিমও দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি টিকিট নেয়ার জন্য আসলে দেখতে পাই ট্রাভেলসটি তালাবদ্ধ। যা দেখে আমি হতভম্ব হয়ে যাই।
বানিয়াচং উপজেলার বাসিন্দা ভুক্তভোগী জসিম উদ্দিন বলেন, আমি এবং আমার মায়ের ওমরাহ হজের জন্য আরাফ ট্রাভেলসে যাই। পরে কথামতো তাকে সবগুলো টাকা পরিশোধ করি। কিন্তু ওমরায় যাওয়ার দুই দিন আগে আমাকে তিনি জানান আমাদের হজে যাওয়া হচ্ছে না। পরে কারণ জানতে চাইলে তিনি কোন সদোত্তার দিতে পারেননি। এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় আমি আমার টাকাগুলো উদ্ধার করি।
মোতাব্বির হোসেন নামে অপর আরেক ভুক্তভোগী বলেন, আমি ওমরাহ হজে যাওয়ার জন্য নিয়াজের কাছে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু নিয়াজ এখন লাপাত্তা হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ ট্রাভেলসের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে দ্রুত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে, আরাফ ট্রাভেলসের মালিক নিয়াজ আহমেদের মোবাইল ফোনে বার বার কল দেয়া হলেও তার ব্যবহৃত নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল