ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে কালবৈশাখী ঝড়ে অন্তত ৪০টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঝড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে। ভেঙে গেছে পল্লী বিদ্যুতের প্রায় ১০টি খুঁটি ও বেশ কিছু ট্রান্সমিটার। অনেক গাছ ভেঙ্গে সঞ্চালন লাইনের ওপর আছঁড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এতে অন্তত ৬৫ হাজর গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থ বন্ধ হয়ে পড়েছে। রবিবার রাত থেকে উপজেলার সদর ইউনিয়ন, নাসিরপুর, দাঁতমন্ডল, ধনকুড়া, কুলিকুন্ডা ও মন্নরপুর এলাকার উপর দিয়ে এ ঝড় বয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, রবিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ঝড়ে বাড়িঘরের টিনের চালা উড়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে আছড়ে পড়েছে। এছাড়া বেশ কিছু দোকানপাট ও হাঁস-মুরগীর খামারও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় গাছপালা ভেঙে বিদ্যুতের তারের ওপর ঝুলে রয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় কয়েকটি শতবর্ষী কৃষ্ণচুড়া গাছের গোড়া ওপড়ে গেছে।
ধনকুড়া গ্রামের আনিস, দাঁতমন্ডল গ্রামের বিল্লাল ও উপজেলা সদরের রহমত উল্লাহ বলেন, ঝড়ে আমাদের ঘরের চালতো উড়াই নিছেই। রাতে ঘুমানোর জায়গাটাও কাইরা নিছে। সদরের অসিউদ্দিন বলেন, ঝড়ের কারণে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকটি গাছ আমাদের বাড়ির উপর ভেঙ্গে পড়ায় লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নাসিরনগরে কালবৈশাখী ঝড়ে সদরে ৯টি, কুলিকুন্ডা ৩টি, দাঁতমন্ডল ১০টি, নাসিরপুর ৫টি, ধনকুড়া ৪টি, মন্নরপুর গ্রামে ৮-১০টি ও বুড়িশ্বর গ্রামে ৩টি ঘর ক্ষতিগ্র হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালবৈশাখী ঝড়ে বড়ঘাট এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের ৩৩ কেভি লাইনের ১০টির খুঁটি ভেঙে বিদ্যুতের তারসহ মাটিতে পড়ে রয়েছে। অনেক গাছ বিদ্যুতের তারের ওপর পড়ে পুরো উপজেলার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সকাল থেকে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন সড়ক থেকে বিদ্যুতের খুঁটি ও তার অপসারণের কাজ শুরু করেছে।
নাসিরনগর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জোনাল ম্যানেজার প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বলেন, রবিবারের কালবৈশাখী ঝড়ে খুঁটি ও মিটারও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমরা জেলা অফিসে যোগাযোগের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে খুঁটি মেরামতের কাজ করছি। ঝড়ে ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় বিকল্প পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ সরবারহের চেষ্টা করা হলেও সে লাইনটি কাজ করছে না। ফলে রাত থেকে বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না গ্রাহকরা।
দাঁতমন্ডল গ্রামের এরশাদ মিয়া বলেন, আমার একটি আধপাকা টিনসেডের ঘর উড়িয়ে দুই কিলোমিটার দূরে নিয়ে গেছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম