নিম্ন ও মধ্যবিত্ত বিভিন্ন শিক্ষার্থী, বইয়ের পোকা যারা নিয়মিত নতুন বই কিনতে পারেন না, তাদের ভরসাস্থল পুরাতন বইয়ের দোকান। এরকম বেশ কয়েকটি পুরনো বইয়ের লাইব্রেরি গড়ে উঠেছে নীলফামারীতে। হাজারো গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের বইয়ের জোগান দিচ্ছে নীলফামারী সদরের আনন্দবাবুর পুল, জলঢাকার রাজার হাট ও সৈয়দপুর শহরের রেলওয়ে স্টেশন সড়কে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি পুরাতন বইয়ের লাইব্রেরি। যেখানে নতুন বইয়ের যে দাম তার অর্ধেকের চেয়ে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন বই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী সেই লাইব্রেরীতে তাদের পছন্দের বই খুঁজতে ব্যস্ত। বই প্রিয় শিক্ষার্থীরা অনেক সময় ধরে তাদের প্রয়োজনীয় বই সংগ্রহ করার পর কম দামে খরিদ করছেন।
লাইব্রেরীতে বই কিনতে আসা শিক্ষার্থী সারাবান তহুরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর থেকেই আমি প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে একবার এখানে এসে পছন্দের বই নিয়ে যাই। অল্প টাকায় বই পাওয়া যায়। এতে টাকাও সাশ্রয় হয়।
পুরাতন বই বিক্রেতা নওশাদ আলী বলেন, লাইব্রেরীতে স্বল্পমূল্যে যে বই পাওয়া যায় তা অন্য লাইব্রেরী অর্থাৎ যেখানে নতুন বই পাওয়া যায় সেখান থেকে কিনতে গেলে অনেক বেশি মূল্য দিয়ে নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আমরা এ লাইব্রেরী করেছি। এখানে বেশিভাগ গ্রামের নিম্ন ও মধ্যবিত্ব পরিবারের শিক্ষার্থীরাই বেশি আসা-যাওয়া করেন। এখানে সব ধরনের বই পাওয়া যায়। আমরা নতুন বইয়ের যে দাম তাঁর অর্ধেকের চেয়েও কম দামে বিক্রি করি। অপর পুরাতন বই বিক্রেতা আহমেদ আলী বলেন, কম দামে বই শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে এতে তারা যেমন খুশি আমরাও খুশি। মূলত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই এসব সংগ্রহ করা হয়। অনেক শিক্ষার্থী বা বিভিন্ন পেশার মানুষ তাঁদের বাসায় আর কাজে না লাগা বইগুলো নিয়ে আসেন আমাদের কাছে। আমরা সেগুলো অল্পদামে খরিদ করে সামান্য লাভে সেগুলো আবার অন্যান্য শিক্ষার্থীদের নিকট বিক্রি করি।
শিক্ষার্থীদের কল্যাণে পুরাতন বইয়ের দোকানগুলোর অবদানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শহরের বিশিষ্টজন ও শিক্ষাবিদরা। সৈয়দপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও কথাসাহিত্যিক হাফিজুর রহমান বলেন, জেলা শহরের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। একাডেমিক অথবা চাকরির প্রস্ততির জন্য অনেক বই প্রয়োজন যা একজন গরীব শিক্ষার্থীর পক্ষে কেনা কষ্টকর। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় এসব বই পুরাতন লাইব্রেরীতে খুব অল্প দামে পাওয়া যাচ্ছে এটা শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এএম