মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের বড় অংশের বাস কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরে। প্রায় ১১ লাখ উদ্বাস্তু মানুষের আশ্রয়ের জন্য দেড় হাজার হেক্টর বনভূমি উজাড় হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে পাহাড়। ফলে ওই এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, গরমে বেড়েছে এ সংক্রান্ত রোগের প্রাদুর্ভাব।
এমন প্রেক্ষাপটে পাহাড় পুনরুদ্ধার করা না গেলেও গাছ ও সবুজ ফিরিয়ে আনতে কাজ শুরু করেছে সরকার। এটি বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিচ্ছে রিফিউজি, রিলিফ এবং রিপ্যাট্রিয়েশন কমিশন (আরআরআরসি)। রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকার বসতবাড়ি ছাড়া খালি স্থানের প্রায় পুরোটাতেই ইতিমধ্যে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে পুনঃবনায়ন ও সবুজায়ন করা হয়েছে। জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ডব্লিউএফপি ও এফএও এ কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছে। এছাড়া এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে ব্র্যাক, কারিতাস ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত ‘বনায়ন’ প্রকল্প এটি বাস্তবায়নে সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
আরআরআরসি সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীর মাধ্যমে যে পরিমাণ গাছ লাগানো হয়েছে তা উজাড় হওয়া বনভূমির এক-তৃতীয়াংশের মতো। বাকি অংশে রয়েছে বসতবাড়ি। খালি অংশের প্রায় পুরোটাই বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আরআরআরসি কমিশনার মো. মিজানুর রহমান (অতিরিক্ত সচিব) জানান, ২০১৮ সাল থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রতি বছর তিন থেকে চার লাখ গাছ লাগানো হচ্ছে। উজাড় হওয়া বনভূমি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হলেও খালি জায়গায় প্রায় শতভাগ বনায়ন কর্মসূচীর আওতায় আনা হয়েছে।
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে সহায়তা দিচ্ছে ‘বনায়ন’প্রকল্প। গাছ লাগানোর পাশাপাশি তার পরিচর্যাও করা হচ্ছে। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ১১টি স্থানে পাহাড় ও বন কেটে মোট চার হাজার ৮৫১ একর বনভূমিতে রোহিঙ্গাদের জন্য প্রায় এক লাখ ৬৫ হাজার আশ্রয় ক্যাম্প ও বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় তিন হাজার ১৫৬ একর সংরক্ষিত বনভূমি। বনভূমি উজাড় হওয়ায় বড় ক্ষতি হয়েছে জীববৈচিত্র্যেরও।
বিডি-প্রতিদিন/শআ