সরকার পতনের পর থেকে প্রশাসনহীন অবস্থায় বেশ কয়েক দিন ধরে শেরপুর জেলা হাসাপাতালে স্বেচ্ছাশ্রম দেয় অসংখ্য বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা। এসময় হাসপাতালের নানা ত্রুটি ও অব্যবস্থাপনা চোখে পড়ে স্বেচ্ছাসেবেদের চোখে। খুঁজে বের করা মোটা দাগে অন্তত ১০টি অনিয়ম তুলে ধরা হয়।
দালাল, চোর, ছিনতাই, অর্থের বিনিময়ে চিকিৎসা, সাটিফিকেট, বাণিজ্য, নার্স ও কর্মচারীদের নিরাপত্তা, রোগীদের খাবার, হাসপাতালে মাতৃত্বকালীন সেবা ইত্যাদি নানা বিষয়ে প্রশ্নবানে জর্জরিত করা হয় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে। দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে সার্বজনীন এই সমস্যাগুলো অনেক পুরাতন কিন্ত রাজনৈতিক কারণে সমাধান হয়নি। এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা। অন্যথায় তারা সাধারণ মানুষজনকে নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ধৈর্য সহকারে দাবিগুলো শুনেছেন এবং শিক্ষার্থীদের শত প্রশ্নের জবাব দিয়ে বলেছেন সরকারি সুযোগ সুবিধার সীমাবদ্ধতার কারণে অব্যবস্থাপনা আছে। তবে সবাই পাশে থাকলে সামাধান সহজ হবে। বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে তিন ঘন্টা ব্যাপি এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষার্থী মোর্শেদ জিতু জানান, সদর হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়ম অসংগতি সবার জানা। এখন সময় এসেছে সেগুলো ঠিক করার। কর্তৃপক্ষ সমস্যার কথা শুনেছেন এবং সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
শিক্ষার্থী ফারহান ফুয়াদ তুহিন বলেন, আমরা পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পেয়েছি ইন্টার্নি দিয়ে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে, রান্নাঘরের পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত না, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে না, চিকিৎসকরা ঠিক সময় হাসপাতালে আসছেন না। এছাড়াও অনেক যন্ত্রপাতি হাসপাতালে না থাকায় সেবা পাচ্ছেন না মানুষ। এছাড়াও দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হচ্ছে অনেক মানুষ। সব বিষয় নিয়ে আমরা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা গুলো সমাধান না হলে আমি সংস্কারের উদ্যোগ নিবো। প্রয়োজনে আন্দোলনে যাবো।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিম মিয়া বলেন, ছাত্ররা অনেক বিষয় পরামর্শ দিয়েছে আমরা সেগুলো নোট করেছি। কিছু বিষয়ে অন্যান্য দপ্তরগুলোকে সংযুক্ত করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে বাজেট প্রয়োজন হবে। তবে হাসপাতালের নিয়ম শৃঙ্খলা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে ভালোবাসা তৈরি সহ আন্তরিকতার সাথে সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
সিভিলে সার্জন ডা. জসিম তার বক্তব্যে বলেন, আমরা আমাদের সীমিত বাজেট ও জনবল দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। হাসপাতালের রোগী বেড়েছে কিন্তু বাজেট বাড়ানি, জনবল বাড়েনি। আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে একমত হয়েিিছ। তারা সুন্দর সুন্দর পরামর্শ দিয়েছে। এখন সময়় কাজ করার। আমরা সেবা নিশ্চিতে কাজ করতে সকলের সহযোগিতা চাই।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ