পাহাড়ে কিছুতেই থামছে না বৃষ্টি। কখনো ভাড়ি, কখনো মাঝারি। আবার কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি অব্যাহত। এতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা বাড়িয়েছে কয়েকগুণ। আতংকে ঘুমহীন রাত পাহাড়বাসীর। যে কোনো মুহূর্তে সখের পাহাড় হতে পারে মৃত্যুপুরি। তাই উদ্বেগ- উৎকণ্ঠায় স্থানীয় প্রশাসন। রাতদিন পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুড়ছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের নিরাপত্তা দল। পাহাড়ে যাতে কোনো প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে তার জন্য এরই মধ্যে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. হাবিব উল্লাহ। রাতদিন করা হচ্ছে মাইকিং। খোলা হয়েছে ৩৫টি আশ্রয় কেন্দ্র।
রাঙামাটি পৌর সভার তথ্য মতে, রাঙামাটি পৌরসভার অধিনে রয়েছে ৯টি ওয়ার্ড। আর এ ৯টি ওয়ার্ডে ঝঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকার সংখ্যা ৩৩টি। সেগুলো হলো-চম্পানির মার টিলা, চেঙ্গির মুখ, আব্দুল আলী একাডেমী সংলগ্ন এলাকা, এসপি অফিস এলাকা, মাতৃ মঙ্গল এলাকা, পুলিশ লাইন, অফির্সাস কলোনী, এডিসি হিল, ওয়াপদা কলোনীর বিএডিসি পাহাড়, দুর্নীতি দমন অফিস, দেওয়ান পাড়া, কিনারাম পাড়া, সিলেটি পাড়া, আলু টিলা, স্বর্ণটিলা, রাজমনি পাড়া, মুসলিম পাড়া, পোষ্ট অফিস, নতুন পাড়া, শিমুলতলী, লোকনাথ মন্দির,আনসার ক্যাম্প, কাঠালতলী মসজিদ কলোনী, জেলা প্রার্থমিক শিক্ষা অফিসার, আলম ডক, গর্জনতলী, চম্পক নগর, পাবলিক হেলথ, আমানতবাগ, জালালাবাদ কলোনী, মুজিব নগর, রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস।
রাঙামাটি আবহাওয়া কর্মকর্তা ক্যাসুইনু মারমা বলেন, টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে রাঙামাটিতে। গত ২৪ ঘণ্টা ১৪০.২ মিলিমিটার ভারি ও মাঝারি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আরও কয়েকদিন থাকতে পারে এমন বৃষ্টিপাত। যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। সবাইকে সর্তক থাকতে হবে।
রাঙামাটি পৌর প্রশাসক মো. মোবারক হোসেন বলছেন, রাঙামাটি পৌর জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে কাজ করে যাচ্ছে। যাতে মানুষ নিরাপদে থাকে সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। পৌর এলাকায় ৯টি ওয়ার্ডে প্রায় ৩৩টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান রয়েছে। এসব স্থনের প্রায় ৬০৯টি পরিবার অনিরাপদ। তাদের নিরাপত্তার জন্য ওয়ার্ড ভিত্তিক আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মাইকিং অব্যাহত আছে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. হাবিব উল্লাহ বলেন, টানা বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়া রয়েছে। তাই কয়েকটি স্থানে সড়কে গাছ ভেঙে পড়েছে। সেগুলো ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সড়িয়ে নিয়েছে। এছাড়া ছোট ছোট পাহাড়ের মাটি ধসের খবর পেয়েছি। তবে কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে কাজ করছে। সাথে সেচ্ছাসেবক দল রয়েছে। এছাড়া পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরাও সাথে রয়েছে। পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র খোলা আছে। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে যাবে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল