কবি, প্রাবন্ধিক ও লোকসংস্কৃতি গবেষক মহিবুর রহিম আর নেই। বুধবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কাউতলীতে নিজ বাসভবনে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫২ বছর।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটায় কাউতলী জামে মসজিদে তার প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার ছাতিরচর গ্রামে। সেখানে বাদ জোহর দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। কবি মহিবুর রহিম স্ত্রী, তিন পুত্রসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মহিবুর রহিম ছিলেন বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য। কাব্য চর্চার পাশাপাশি তিনি সাহিত্য বিশ্লেষক ও লোকসংস্কৃতি গবেষক হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন। পেশাগত জীবনে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিনাইর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজে বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
সাহিত্যজীবনে তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ ও গবেষণা গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত চোখ, হে অন্ধ তামস, অনাবাদি কবিতা, দুঃখগুলো অনাদির বীজপত্র, সবুজ শ্যামল মন, শিমুল রোদে রঙিন দিন, হৃদয়ে আমার কোনো মন্দা নেই, হাওর বাংলা এবং গবেষণামূলক গ্রন্থ ভাটি বাংলার লোকভাষা ও লোকসাহিত্য।
লোকসাহিত্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়েও তার গবেষণা ছিল বিস্তৃত। কুমিল্লা অঞ্চলের লোকসংগীত, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লোকসাহিত্য, ভাটি বাংলার লোক ঐতিহ্য নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তার গবেষণায় স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জাতীয় সাংস্কৃতিক সমীক্ষা গ্রন্থমালা। বাংলা একাডেমির লোকজ সংস্কৃতির বিকাশ কর্মসূচির অধীনে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লোকসাহিত্য’ নিয়েও তিনি গবেষণা করেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই