হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে নড়াইল সদর উপজেলার রুখালী গ্রামে ষাঁড়ের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই লড়াই দেখতে এসে ষাঁড়ের তাড়া খেয়ে রমেন মোল্যা (৩৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। খুলনা থেকে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল রমেনের মরদেহ বাড়িতে আনা হয়েছে। তিনি পেশায় টিউবওয়েল মিস্ত্রি।
রমেন কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান মোল্যার ছেলে। রমেন প্রায় আট কিলোমিটার দূর থেকে রুখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গত সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অনুষ্ঠিত ষাঁড়ের লড়াই দেখতে গিয়ে গুরুতর আহত হন।
রমেনের মামাতো ভাই আনিস শেখসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লড়াই শুরু হলে হঠাৎ করে একটি ষাঁড় মাঠ থেকে বাইরের দিকে দৌঁড় দেয়। আত্মরক্ষার্থে দর্শকেরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। একপর্যায়ে রমেন ষাঁড়ের দৌড় খেয়ে পড়ে গিয়ে খাবারের ভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এ সময় ষাঁড়টি রমেনকে চেপে ধরে। এতে তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আহত হন। আহত রমেনকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এদিকে, বিভিন্ন পেশার মানুষ জানান, ষাঁড়ের লড়াই অমানবিক কাজ। শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য ষাঁড়ের লড়াই কাম্য হতে পারে না। এতে ষাঁড়ের যেমন কষ্ট হয়, তেমনি ষাঁড়ের জীবনের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। এছাড়া যারা ষাঁড়ের লড়াই দেখতে যান, সেইসব দর্শকও চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। সঙ্গতকারণে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে রুখালী গ্রামে ষাঁড়ের লড়াই দেখতে জীবন গেল রমেন নামে এক যুবকের। এছাড়া যেখানে ষাঁড়ের লড়াই হয়, তার আশেপাশের রাস্তাগুলোতে যানবাহন চলাচলে বিঘ্নসহ চরম জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়।
এদিকে, ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর খেলার নামে ষাঁড়, মোরগ, ছাগল লড়াই ও কুকুর নিধন বন্ধে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
অপরদিকে, নড়াইলের বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক ষাঁড়ের লড়াই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই লড়াই অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদসহ জনপ্রতিনিধিরা অতিথি হচ্ছেন এবং পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল