সুমধুর কণ্ঠে ভেসে আসছে মুয়াজ্জিনের আজান।
হাইয়া আলাস সালাহ।
পাখির কিচিরমিচির কলতান।
মোরগের ডাক।
কবুতরের বাকুম বাকুম গান।
এসব যেন গাঁয়ের অ্যালার্ম। মনোমুগ্ধকর।
অ্যালার্মে রুনার নিয়মিত ঘুম ভেঙে যায়। রুনার বয়স পাঁচ বছর। মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে। আজও ঘুম ভাঙল। ওজু করে মায়ের সাথে নামাজ পড়ল। বাড়ির পাশেই মসজিদ। মক্তবে পড়ানো হয়। গাঁয়ের সোনামণিরা প্রতিদিন মক্তবে পড়তে যায়। হাতে আমপারা বই। রুনা আজ প্রথম যাবে মক্তবে।
মায়ের সাথে রুনা মক্তবে এলো। আজ প্রথম তাই মায়ের সাথে। আগামী কাল থেকে চাচাতো ভাই জিহাদের সাথে আসবে।
মক্তবে পড়া শুরু হয়েছে। সবাই একযোগে পড়ছে।
আহা কী মধুময়। কোকিলের মতো সুর। সব সুখ, শান্তি যেনো কড়া নাড়ছে মক্তবে।
খই ফুটছে সবার মুখে।
আলিফ’ তে আল্লাহ
বা’ তে বাইতুল্লাহ।
এভাবে চলছে। মানে চলছে। ছোট্ট সোনামণিরা কোনো রকম দুষ্টুমি না করে পড়ছে। শুধু পড়ছে। রুনাও সহপাঠীদের সাথে পড়ছে।
হুজুর সবাইকে বলল, আচ্ছা একটু জিরিয়ে নাও। আমাদের মাঝে রুনা আজ প্রথম। ওর সাথে একটু কথা বলি। তোমরাও পরিচিত হও।
পরিচয় পর্ব শেষ হলো।
হুজুর রুনাকে বলল, মামুনি সুরা ফাতিহা পড়তে পারো। একটু হেসে বলল, জি হুজুর। আমি পারি। মায়ের কাছে শিখেছি। মিষ্টি কণ্ঠে সুরা ফাতিহা পাঠ করল। আহা কী মধুর। শুধু শুনতেই মন চায়।
আবার পড়া শুরু হলো। এবার আর আমপারা বই দেখে নয়।
তাহলে কেমন করে পড়বে।
বলতে পারবে তোমরা।
ওমা, পারবে না বুঝি।
আচ্ছা তাহলে শোনো?
হুজুরের সাথে সবাই কণ্ঠ মেলাবে।
হুজুর ওজু, গোসল, ঘুম, খাওয়া, মসজিদে প্রবেশ ও বের হওয়ার দোয়া শিখাচ্ছেন। হুজুরের সাথে সোনামণিরাও জোরে জোরে কণ্ঠ মেলায়।
এভাবে পড়বে। বুঝতে পেরেছো? তোমরাও কিন্তু মক্তবে পড়তে যাবে।
জীবন গড়ার জন্যই প্রথমে পড়তে হবে। আমাদের নবী করিম (স.) কে সর্বপ্রথম আল্লাহ পড়তে বলেন। তাইতো প্রথমেই সুরা আলাকের পাঁচ আয়াত নাজিল করেন।
এই পাঁচ আয়াতের প্রথমেই আছে ইকরা।
ইকরা অর্থ পড়ুন। আজ থেকে প্রতিজ্ঞা করব আমরা পড়ব। নিয়মিত হোমওয়ার্ক করব। পড়বে কিন্তু।