শেষ জমানায় কী হবে, কীভাবে হবে তা জানার আগ্রহ আমাদের অনেকের। রসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবদ্দশায় ইসলামের প্রথম যুগ ছিল রহমত ও বরকতের সোনালি যুগ। তারপর কেটেছে সাহাবাদের গৌরবোজ্জ্বল যুগ। তারপর অতিবাহিত হয়েছে তাবেইন ও তাবে-তাবেইনদের ইমানদীপ্ত যুগ। তার পর থেকে ধীরে ধীরে পৃথিবীতে বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মাঝে ইমান ও আমলের ঘাটতি দেখা দিতে থাকে। একসময় পৃথিবীর হায়াত ফুরাবে। সংঘটিত হবে কিয়ামত। তবে কিয়ামতের আগে কী কী বিপর্যয় দুনিয়ায় নেমে আসবে এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে তার অনেক বিবরণ রসুলুল্লাহ (সা.) দিয়ে গেছেন। হাদিসের কিতাবগুলোয় পাওয়া যায়, হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত : রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, এ দীন ইসলামের সূচনা হয়েছে নবুয়ত এবং রহমতের দ্বারা। তারপর আসবে খিলাফত এবং রহমত (এর জমানা)। তারপর আসবে জালিম রাজা-বাদশাহদের জমানা। তারপর আসবে কাঠিন্য, উচ্ছৃঙ্খলতা, নৈরাজ্য এবং ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টিকারীর জমানা। তারা রেশমি কাপড় ব্যবহার করা, অবৈধভাবে নারীদের উপভোগ করা এবং শরাব (মদ) পান করাকে বৈধ মনে করবে। তার পরও তাদের রিজিক দান করা হবে এবং পার্থিব কাজে তাদের সাহায্য করা হবে। পরিশেষে এসব পাপে লিপ্ত থাকা অবস্থায় কিয়ামত দিবসে তারা আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে (বায়হাকি)। এ বিষয়ে হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত : তিনি বলেছেন, আমি রসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, সর্বপ্রথম যে বস্তুকে উল্টিয়ে দেওয়া হবে ইসলামী বিধানগুলো থেকে যেভাবে কোনো পাত্রকে উল্টিয়ে দেওয়া হয়, তা হবে শরাবের বিষয়টি। তখন জিজ্ঞেস করা হলো, ইয়া রসুলাল্লাহ! তা হবে কীভাবে? অথচ শরাব তো হারাম। তার বিধান তো আল্লাহতায়ালা সুস্পষ্টরূপে বলে দিয়েছেন। জবাবে রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তারা শরাবের অন্য নাম রেখে তা হালাল করে নেবে। (দারেমি)। অর্থাৎ মদ তখন বিভিন্ন নামে মানুষ পান করবে। শেষ জমানার বিপর্যয় সম্পর্কে আরও এসেছে, হজরত আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত : তিনি বলেছেন, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, আমার এ উম্মত আল্লাহতায়ালার রহমত লাভকারী। তাদের ওপর আখিরাতে (চিরস্থায়ীভাবে) আজাব হবে না। তবে দুনিয়ায় তাদের ওপর আজাব হলো ফিতনা-ফাসাদ, ভূকম্পন এবং কাটাকাটি, হানাহানি (আবু দাউদ)।
লেখক : খতিব, বাইতুর রহমত জামে মসজিদ, গাজীপুরা, টঙ্গী।