বুধবার, ২২ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইফতারি সমাচার

ভেজাল বন্ধে নিতে হবে সমন্বিত পদক্ষেপ

রাজধানীর গড়পড়তা কোনো দোকানের ইফতারই নিরাপদ নয়। তা অভিজাত দোকানের হোক কিংবা ফুটপাথের দোকানের হোক। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আয়োজিত আলোচনা সভায় এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। ইফতারির অপরিহার্য উপকরণের মধ্যে রয়েছে ছোলা, পিয়াজু, বেগুনি, মুড়ি ও জিলাপি। এ উপকরণগুলোর প্রতিটিই ভেজালের শিকার। মুড়ি ছাড়া ইফতার একটি অকল্পনীয় বিষয়। সেই মুড়ি আকারে বড় ও সাদা করতে ব্যবহার করা হচ্ছে বিষাক্ত রাসায়নিক সোডিয়াম হাইড্রো সালফাইড। ইফতার সামগ্রীতে আম, আপেল, কলা ইত্যাদি ফল ব্যবহৃত হয়। রাসায়নিক দিয়ে ফল সংরক্ষণ ও পাকানোর বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও অন্যান্য ক্ষেত্রে অবস্থা তথৈবৈচ। রোজায় মিষ্টি জাতীয় খাদ্যের কদর বাড়ে। মিষ্টান্ন তৈরিতে ব্যবহৃত হয় সোডিয়াম সাইফ্লাসেট নামের ভেজাল চিনি। মিষ্টি ও ইফতার পণ্য রঙিন করতে ঢালাওভাবে ব্যবহার করা হয় টেক্সটাইল রং। জিলাপি মচমচে রাখার জন্য তেলের সঙ্গে মেশানো হয় মবিল। ইফতারি তৈরিতে যে তেল ব্যবহার করা হয় সেখানেও রয়েছে ভেজালের রাজত্ব। অসৎ ব্যবসায়ীদের কোনো নীতিবোধ থাকার কথা নয়। ধর্মীয় মূল্যবোধও তাদের উদ্বুদ্ধ করে না। ফলে মাহে রমজানকে তারা বাড়তি মুনাফা অর্জনের মাস হিসেবে নেয়। ইফতারি ও সাহরিতে ব্যবহৃত হয় যেসব উপকরণ তাতেও যথেচ্ছভাবে ভেজাল মেশানো হয়। প্রতি বছর রমজানে ভেজাল ঠেকাতে মোবাইল কোর্ট মাঠে নামে। এ বছর আগে থেকেই মাঠে রয়েছে মোবাইল কোর্ট। ফরমালিনের বিরুদ্ধে সরকার রীতিমতো যুদ্ধও ঘোষণা করেছে। কিন্তু খাদ্যদ্রব্যে অন্যান্য রাসায়নিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেই। রাজধানীর অধিবাসীদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা সিটি করপোরেশনের অন্যতম দায়িত্ব। ঢাকাকে দ্বিখণ্ডিত করে দুই সিটি করপোরেশন করা হয়েছিল নাগরিক সেবার মান উন্নত করার নামে। সে বিষয়ে তারা কতটা মনোযোগী তা স্পষ্ট নয়। নকল ভেজালের বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশনের পদক্ষেপ নেই বললেই চলে। আমাদের মতে, শুধু ইফতারি পণ্য নয়, যে কোনো খাদ্যপণ্য ভেজালের ক্ষেত্রে সরকার এবং সংশ্লিষ্টদের কঠোর হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর