সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিদেশে নিজস্ব জমিতে দূতাবাস

দেশের মর্যাদা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে

বিদেশে দেশের সব দূতাবাস নিজস্ব জমিতে নির্মাণের প্রস্তাবনা নিঃসন্দেহে একটি তাত্পর্যপূর্ণ উদ্যোগ। বিদেশে দেশের দূতাবাসগুলো নিছক একটি ভবন নয়, এটি একখণ্ড বাংলাদেশ। দূতাবাসগুলো ১৬ কোটি মানুষের এই মহান জাতির প্রতিনিধিত্ব করে। দুনিয়ার সব অগ্রসর দেশ-বিদেশে তাদের দূতাবাস তৈরি করে নিজেদের কেনা জমিতে। এটি দেশের মর্যাদার প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হয়। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অন্তত ৩২টি দেশে নিজস্ব জমিতে দূতাবাস স্থাপনের জন্য জমি কেনার পরিকল্পনা নিয়েছে। পরিকল্পনাটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। এটি অনুমোদিত হলে ২০২৪ সাল নাগাদ বিদেশে বাংলাদেশের যেসব মিশন থাকবে তার অধিকাংশই নিজস্ব জমিতে স্থানান্তর করা সম্ভব হবে। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য একটি সমন্বিত, কার্যকর ও বেগবান পররাষ্ট্র নীতি পরিচালনা এবং বহির্বিশ্বে কূটনৈতিক উপস্থিতি ও তত্পরতা টেকসই করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর একনেক সভায় বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো নিজস্ব ভবনে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রকল্প প্রণয়নের নির্দেশনা দেন। স্মর্তব্য, বর্তমানে বিশ্বের ৫৫টি দেশে বাংলাদেশের ৭২টি মিশন রয়েছে। যার মধ্যে ৫৪টি দূতাবাস, দুটি স্থায়ী মিশন, ৮টি কনস্যুলেট জেনারেল, তিনটি ডেপুটি হাইকমিশন, দুটি সহকারী হাইকমিশন, একটি কনস্যুলেট এবং একটি ভিসা অফিস। এর মধ্যে মাত্র ১০টি দূতাবাসের নিজস্ব জমি রয়েছে। তবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশের অর্ধশতাধিক পূর্ণাঙ্গ দূতাবাসের বেশিরভাগই চলছে ভাড়া বাড়িতে। এ কারণে দূতাবাস পরিচালনায় নানা ধরনের সংকট সৃষ্টি হয়। আর্থিক টানাপড়েনসহ নানা ধরনের সীমাবদ্ধতার শিকার হয় দূতাবাসগুলো। স্থায়ী ভবনে দূতাবাস প্রতিষ্ঠা সম্ভব হলে সে সব অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার ইতি ঘটানো সম্ভব হবে। দূতাবাসগুলোর ভাড়া বাবদ প্রতিবছর যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়, তা থেকেও রেহাই পাওয়া যাবে। আমরা আশা করব বিদেশে নিজস্ব জমিতে দূতাবাস প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। দূতাবাসে প্রবাসীদের সেবা প্রদানের পর্যাপ্ত সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে এমনটিও কাম্য। জমি কেনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সহযোগিতা নিশ্চিত করতে উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগের কথাও ভাবা যেতে পারে।

সর্বশেষ খবর