বৃহস্পতিবার, ৩ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান

জাতিসংঘকে উদ্যোগী হতে হবে

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের তিন দিনের বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে যে আশার আলো জ্বলে উঠেছিল সফর শেষে তা অনেকটাই নিষ্প্রভ হয়ে গেছে বললে অত্যুক্তি হবে না। বাংলাদেশ ত্যাগের আগে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দল সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুকে তাদের অগ্রাধিকার তালিকায় রাখার কথা বললেও একই সঙ্গে বলেছেন এই সংকটের দ্রুত কোনো সমাধান নেই। এটি একটি মানবিক সংকট ও মানবাধিকার ইস্যু। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তারা কাজ করবেন। চীন, রাশিয়ার মতো দেশগুলো রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান চাইলেও নৃশংসতার দায়ে মিয়ানমারকে জবাবদিহিতায় আনার উদ্যোগে তারাই বাধা— এমন ইঙ্গিতও মিলেছে তাদের বক্তব্যে। এমনকি তারা নিরাপত্তা পরিষদকে নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী হতেও নিষেধ করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যায় এমন উদ্যোগের ব্যাপারে ভেটো ক্ষমতাধর চীন ও রাশিয়ার অনীহার ব্যাপারে ইঙ্গিত করে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদে এই ইস্যুতে জবাবদিহিতার কাঠামো সৃষ্টি করা অত্যন্ত কঠিন। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেওয়ার মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করে বলেছেন, এটি অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য একটি বোঝা। বাংলাদেশ এ সংকটের জন্য দায়ী নয়। ১০ লাখেরও বেশি লোককে আশ্রয় দেওয়াও কঠিন কাজ। প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে স্বেচ্ছায় নিরাপদ ও সম্মানজনকভাবে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে তারা কাজ করবেন। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া দ্রুততর করারও চেষ্টা চালাবেন তারা। রোহিঙ্গা সমস্যা প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। বাংলাদেশ কোনোভাবেই এ ইস্যুর কোনো পক্ষ নয়। নিতান্ত মানবিক কারণে বিশ্ব সমাজের আহ্বানে বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১০ লাখেরও বেশি নাগরিককে আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছে। মিয়ানমার তার নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়নে দৃষ্টিগ্রাহ্য কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় এ মানবিক সমস্যা জটিল হয়ে উঠছে। মানবিক বিপর্যয় এড়াতেই এ ব্যাপারে জাতিসংঘ আরও উদ্যোগী হবে— এমনটিই দেখতে চায় বাংলাদেশের মানুষ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর