শনিবার, ২৩ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

ট্রাম্পের সুমতি

যুক্তরাষ্ট্র ভাবমূর্তির সংকট থেকে রক্ষা পেল

জনমতের চাপে যুক্তরাজ্যের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত সুমতির পরিচয় দিয়েছেন। মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের এই ক্ষমতাধর দেশটি যে ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছিল, তা পায়ে পিষে ফেলার ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সে দেশের ক্ষমতাদর্পী প্রেসিডেন্ট। অবৈধ অভিবাসনের দায়ে আটক পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে রাখার একটি নির্বাহী আদেশে সই দিয়েছেন ট্রাম্প চারদিকের তীব্র সমালোচনা ও জনমতের চাপে। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা বাবা-মায়ের কাছ থেকে সন্তানদের আলাদা রাখার নীতি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়ার পর গত বুধবার ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশ এলো। আদেশে সই করার পর ট্রাম্প বলেছেন, গ্রেফতার বাবা-মায়ের কাছ থেকে সন্তানদের বিচ্ছিন্ন করার দৃশ্য তিনি আর দেখতে চান না। তবে ইতিমধ্যে যে পরিবারগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদাভাবে রাখা হয়েছে, তাদের বিষয়ে নির্বাহী আদেশে কিছু বলা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি বলেছে, ৫ মে থেকে ৯ জুনের মধ্যে মোট ২ হাজার ২০৬ জন কারাবন্দী বাবা-মায়ের কাছ থেকে ২ হাজার ৩৪২ জন শিশুকে আলাদা করে আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তন আনলেও ট্রাম্প বলেছেন, তার সরকার অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রাখবে এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিচার চালিয়ে যাবে। জানিয়েছেন তার স্ত্রী মেলানিয়া ও মেয়ে ইভাঙ্কা অভিবাসী পরিবারগুলোকে বিচ্ছিন্ন করার নীতি পরিবর্তনের পক্ষে জোরালো অবস্থানে ছিলেন। ট্রাম্প অবশ্য এর আগে বলেছিলেন, নির্বাহী আদেশ দিয়ে তিনি ওই নীতিতে পরিবর্তন আনতে পারবেন না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশের ফলে যুক্তরাষ্ট্র তার মানবিক রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ধরে রাখতে সক্ষম হবে। ইতিমধ্যে বিচ্ছিন্ন করে রাখা পরিবারগুলোর ব্যাপারেও অচিরেই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, এমনটিই আশা করা হচ্ছে। স্বীকার করতেই হবে, অবৈধ অভিবাসন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও একটি সমস্যা। তবে মার্কিন নেতাদের বোঝা উচিত যুক্তরাষ্ট্র মূলত অভিবাসীদের নিয়ে গড়ে ওঠা একটি দেশ। বিশ্বের নানা জাতির মানুষের মিলন কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অভিবাসীদের প্রতি কঠোর মনোভাব যুক্তরাষ্ট্রের অস্তিত্বের ওপর আঘাত হানার শামিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সুমতি সে আঘাত থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষা করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর