বুধবার, ২০ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

সিগারেট ছাড়বেন কীভাবে

আফতাব চৌধুরী

সিগারেট ছাড়ার আগে থেকেই একটা মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখা উচিত। কারণ অনেকেই সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার পরও ফের ধূমপান করেন। মুশকিল হলো, ধূমপানে আসক্ত মানুষটি সিগারেটের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। এ নির্ভরশীলতা কাটাতে হয়। সবার আগে নিজেকে বোঝান, যেভাবেই হোক সিগারেট ছাড়তে হবে। এর জন্য নিজেকেই নিজে প্রস্তুত করতে হবে। একটা নির্দিষ্ট তারিখ ঠিক করে রাখুন, ওই তারিখ থেকে সিগারেট খাবেন না। সিগারেট ছাড়ার জন্য কোনো ধরনের সাহায্য প্রয়োজন হলে তা ভেবে নিন। সে হিসেবে পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গেও কথা বলুন। তাদের জানা উচিত আপনি সিগারেট ছাড়তে চান। সাধারণত সবাই সিগারেট ছাড়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেবে। সিগারেট ছাড়তে মন চাইছে, অথচ পারছেন নাÑ এমন ক্ষেত্রে ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাবগুলোর দিকে নজর দিন। খেয়াল করলে দেখবেন, ফুসফুসের প্রায় সব ধরনের বারোটা বাজানো, ক্যান্সারের আশঙ্কার সঙ্গে নিজের স্ত্রী, আত্মীয়স্বজন, সন্তানেরও ভয়াবহ ক্ষতি হচ্ছে। আশপাশে ধূমপায়ীদের দিকে খেয়াল করুন। দেখবেন, সিগারেট এতটাই খারাপ যে অনেক সময় ধূমপায়ীরা সিগারেটের পর অ্যালকোহল, গাঁজা, ড্রাগেও আসক্ত হয়ে পড়ছে। এর পরিণতি ভয়ঙ্কর। নিজেকে প্রশ্ন করুনÑ আপনি কি নিজেও ওই একই রাস্তায় হাঁটতে চান? এবার আসা যাক সিগারেট ছাড়ার পর সেই সিদ্ধান্তে অটল থাকা প্রসঙ্গে। এ ক্ষেত্রেও কতগুলো মানসিক প্রস্তুতি প্রয়োজন। যেদিন ছাড়বেন সেই দিনটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বার বার আপনার সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা হবে। তাই সারা দিন নিজেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখুন। ধূমপায়ীদের নির্দিষ্ট সময় থাকে সিগারেট খাওয়ার। সিগারেট ছাড়ার পর ঠিক ওই সময়গুলোয় সিগারেট খাওয়ার মারাত্মক ইচ্ছা জাগে। সাধারণত ২ থেকে ৫ মিনিটের জন্য ওই তীব্র ইচ্ছা স্থায়ী হয়। এই সময়ে অল্প অল্প পানি পান করুন। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন। ২ থেকে ৫ মিনিট কাটিয়ে দিতে পারলেই ইচ্ছাটা অনেক কমে যায়। সকালে উঠেই চা বা কফির সঙ্গে সিগারেট খান। অর্থাৎ চা পানের সঙ্গে সিগারেট খাওয়ার একটা সম্পর্ক রয়ে যায়। এমন হলে সকালে উঠে প্রথমেই চা পান করবেন না। বরং মুখ ধুয়ে আগে ব্রেকফাস্ট সেরে ফেলুন বা অন্য কিছু করুন। ঘর থেকে বেরোনোর আগে তড়িঘড়ি চা পান করে কাজে চলে যান। দেখবেন সিগারেট খাওয়ার কথা মাথায়ই আসছে না। ভারী কিছু খাওয়ার পর সিগারেট ধরানোর অভ্যাস থাকলে খাদ্য গ্রহণের পর অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ুন। কাউকে সিগারেট খেতে দেখলে সেদিকে যাবেনই না। কারণ অন্যকে ধূমপান করতে দেখলে সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা জাগে। প্রতিদিন এক্সারসাইজ করুন। শরীর-মনে চনমনে থাকুন। অনেকেই বলেন ঠিক করে কাজ করতে পারছেন না সিগারেট ত্যাগ করার কারণে। সিগারেট ছাড়ার পর এমন সামান্য সমস্যা দেখা দেয়। তবে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই এ সমস্যা কেটে যাবে। যারা সিগারেট ছেড়েছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলুন। মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে কগনেটিভ বিহেভিয়ার থেরাপির সাহায্য নিতে পারেন।

            লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর