বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

নুসরাত হত্যার স্বীকারোক্তি

শিউরে ওঠার মতো নৃশংসতা

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে নৃশংসভাবে আগুনে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় জড়িত দুই আসামি নূর উদ্দীন ও শাহাদত হোসেন শামীম আদালতে ১৬৪ ধারায় যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তাতে রয়েছে গা শিউরে ওঠার মতো তথ্য। তারা বলেছেন, নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় তার দুই সহপাঠী উম্মে সুলতানা পপি ও কামরুন নাহার মমিও জড়িত ছিল। ৬ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ৯টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে ঘটানো হয় নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনা। বান্ধবী নিশাতকে ছাদে মারধর করা হচ্ছে- পপির এমন তথ্যের ভিত্তিতে নুসরাত ছাদে ওঠে। ছাদে নিশাতকে না দেখলেও সেখানে আগে থেকে অপেক্ষমাণ ছিল শামীম, জাবেদ, জুবায়ের ও বোরকা পরিহিত আরেক ছাত্রী। পরে পপি ছাদে ওঠে। মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে বার বার হুমকি দেওয়ার পরও কোনো কাজ না হলে তাকে মুখ চেপে ধরে শামীম। নুসরাতকে ওড়না দিয়ে চেপে ধরে পপি। ওড়নার একটি অংশ দিয়ে নুসরাতের পা বেঁধে ফেলে আরেক ছাত্রী। এরই মধ্যে নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেয় জুবায়ের। সর্বশেষ ম্যাচের কাঠি দিয়ে নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় জাবেদ। সকাল ১০টা ১২ মিনিটে ছয় সেকেন্ডের একটি কল করে শাহাদত হোসেন শামীম অবহিত করে ম্যানেজিং কমিটির এক প্রভাবশালী সদস্যকে। নুসরাতকে অগ্নিদগ্ধ করার পর উম্মে সুলতানা পপি ও কামরুল নাহার মমি নির্বিকার চিত্তে আলিম পরীক্ষায় অংশ নেয়। পপি বা শম্পার মা মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজের স্ত্রীর বড় বোন। সেই সূত্রে খালুর লাম্পট্য লুকাতে সে সহপাঠী নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় অংশ নেয়। ইতিমধ্যে নুসরাত হত্যার সঙ্গে জড়িত কেউ রেহাই পাবে না এমন আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোনাগাজী থানার সাবেক ওসির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন এক আইনজীবী। নুসরাতের জেরার ভিডিও অনলাইনে ছেড়ে দেওয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ভঙ্গের দায়ে ওই মামলা করা হয়। সব মিলিয়ে নুসরাতের মৃত্যু যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে প্রতিবাদী করে তুলেছে। নুসরাত মরেও প্রতিবাদ হয়ে জেগে রয়েছে মানুষের মনে।

 

 

সর্বশেষ খবর