শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

ওয়াসার মানহীন পানি

দুর্নীতি ও অসততার প্রতিচিত্র

ওয়াসার পানি পানযোগ্য না হওয়ায় তা ফুটিয়ে পান করা হয়। আর পানি ফোটানো বাবদ আনুমানিক হিসাবে বছরে ৩৩২ কোটি টাকা খরচ হয়। সোজা হিসাবে প্রতিদিন ওয়াসার পানি পানযোগ্য করে তোলার জন্য প্রায় ১ কোটি টাকার গ্যাস পোড়ানো হয় যা অপচয়ের শামিল। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ‘ঢাকা ওয়াসা : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াসা সেবাগ্রহীতার ৩৪ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন, পানির গুণগতমান সবসময়ই খারাপ থাকে। সেবাগ্রহীতার ৯৩ শতাংশ বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি পান-উপযোগী করেন। এর মধ্যে ফুটিয়ে সিদ্ধ করে পান করেন ৯১ শতাংশ। জরিপে অংশ নেওয়া ২০ দশমিক ৬ শতাংশ সেবাগ্রহীতা সারা বছর ও ৯৪ শতাংশ গ্রীষ্মকালে পানি ঘাটতিতে থাকেন। সেবাগ্রহীতার ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ বলছেন, ওয়াসার পানি অপরিষ্কার এবং ৪১ দশমিক ৪ শতাংশ দুর্গন্ধযুক্ত বলে অভিযোগ করেছেন। টিআইবি বলছে, ঢাকা ওয়াসার নিয়োগ, পদায়ন ও বদলি, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণসহ ক্রয় প্রক্রিয়া, প্রকল্প বাস্তবায়ন, মিটার রিডিং এবং সর্বোপরি গ্রাহকসেবায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি রয়েছে। পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনসংক্রান্ত সেবা বা সমস্যা নিয়ে ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে যোগাযোগ করা ২৬ দশমিক ৯ শতাংশ সেবাগ্রহীতার ৬১ দশমিক ৯ শতাংশই অনিয়ম, হয়রানি ও দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তিতে ওয়াসার হটলাইন ব্যবস্থা চালু থাকলেও অভিযোগকারীর ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন, অভিযোগ করলেও এসবের কোনো সমাধান হয়নি। দুনিয়ার বেশির ভাগ দেশে গ্রাহকের জন্য পাইপলাইনে যে পানি সরবরাহ করা হয় তা না ফুটিয়েই পান করা হয়। ঢাকার ওয়াসার গ্রাহকরা অনেক ক্ষেত্রে পানি ফুটিয়েও স্বস্তিতে পান করতে পারেন না, কারণ পানিতে থাকে দুর্গন্ধ। স্যুয়ারেজের পানি ওয়াসার পাইপলাইনে ঢুকে তা পানের অযোগ্য করে তুলছে এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে। ওয়াসার গ্রাহকরা অর্থের বিনিময়ে পানি কেনেন। কিন্তু সে পানির মান পানের অযোগ্য হবে তা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। দুর্নীতি, অসততায় ওয়াসার কিছু লোক লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ।

এ অবস্থার অবসান হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর