বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

নকল-ভেজাল ওষুধ

কড়া আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিন

নকল-ভেজাল ওষুধের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। মানুষ রোগ নিরাময়ের জন্য যে ওষুধ ব্যবহার করে তা ভেজাল হলে যে জীবন নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু করে তা সহজে অনুমেয়। ওষুধ ভেজালকারীরা ক্যান্সার, ডায়াবেটিসসহ নানা ধরনের জীবনঘাতী রোগের ওষুধ নকল করতেও পিছপা হচ্ছে না। নকল-ভেজালের পাশাপাশি রয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের রাজত্ব। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর ও র‌্যাবের তথ্যমতে রাজধানীর ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি হচ্ছে। সারা দেশে এমন ফার্মেসির সংখ্যা আরও বেশি হওয়ারই কথা। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের হিসাবে নকল ওষুধের বিরুদ্ধে গত বছর মোট মামলা হয়েছে ১ হাজার ৫৫৭টি। এ সময় ২২ কোটি ৬৮ লাখ ১ হাজার ৬৬০ টাকা জরিমানা ও ৩৪ জনকে জেল দেওয়া হয়। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ১৮৯টি মামলা হয়েছে। জরিমানা হয়েছে ১৯ লাখ ৬৮ হাজার ৮১৪ টাকা এবং পাঁচ কারখানা সিলগালা করা হয়েছে। এ ছাড়া গত ২৫ এপ্রিল ২৮টি কোম্পানির ৬৮টি ওষুধের নিবন্ধন সাময়িকভাবে বাতিল করে সংস্থাটি। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর তাঁতীবাজার থেকে ক্যান্সার ও বিভিন্ন জটিল রোগের ৪০ হাজার পাতা নকল ওষুধসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা চীন থেকে নকল ওষুধ তৈরি করে এনে দেশে বাজারজাত করতেন। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবমতে বিশ্বের মোট ওষুধ উৎপাদনের ১০ শতাংশ হলো নকল ও ভেজাল। উন্নয়নশীল দেশগুলোয় নকল-ভেজালের অপ্রতিরোধ্য দৌরাত্ম্য চলছে। দুনিয়ার প্রায় ১০০ দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। তার পরও দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ খাঁটি ও মানসম্মত ওষুধ পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রাজধানীসহ মহানগরগুলোর বাইরে মানহীন ওষুধের রাজত্বই বেশি। চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকারের একটি। যারা নকল-ভেজাল ওষুধ তৈরির সঙ্গে জড়িত তারা সেই অধিকারকে কেড়ে নিচ্ছে। মানুষের জীবন নিয়ে যারা অপখেলা খেলছে তাদের সামাল দিতে সরকারকে শক্ত হতে হবে। ওষুধ নকল-ভেজালের হোতাদের মনে ভয় ঢোকাতে কঠিন শাস্তিসংবলিত আইন প্রণয়নের কথা ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর