মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

আইয়ুব খানের গোলাপ ফুল ও সময়ের কাহন

আফরোজা পারভীন

আইয়ুব খানের গোলাপ ফুল ও সময়ের কাহন

‘পাকিস্তান’ শব্দটি উচ্চারিত হলে যা কিছু মনে ভেসে ওঠে তার কিছুই আমার ভালো লাগে না। ১৯৬৫ সালের পাকিস্তান প্রেসিডেন্সি ইলেকশন হয়। মনে আছে আইয়ুব খানের মার্কা ছিল গোলাপ ফুল আর ফাতেমা জিন্নাহর হারিকেন। তখন আমার বয়স ৭-৮ বছর। প্রগতিশীল রাজনৈতিক পরিবারে জন্মেছিলাম বলে সচেতন ছিলাম। পাকিস্তান রাষ্ট্রযন্ত্র আর তার শাসকদের ঘৃণা করতে শিখেছিলাম। সরকারি কাজে দুবার পাকিস্তান গিয়েছি। বেনজির ভুট্টোকে দেখেছি কাছ থেকে। ভুলতে পারিনি উনি ভুট্টোর কন্যা। আর পাকিস্তানের ‘প্রেসিডেন্টস হাউসে’ গিয়ে বার বার মনে হয়েছে প্রাসাদের প্রতিটি ইট, প্রতিটি বালুকণায় মিশে আছে আমার ভাইদের ঘামের দাম। ‘মারগালা’ পাহাড়ের সবুজের দিকে তাকিয়ে মনে হয়েছে, এ ঘাস হেলিকপ্টারে করে আমার দেশ থেকে আনা হয়েছিল। যে হেলিকপ্টারের ফুয়েলে ছিল আমার শ্রমিকের ঘামের দাম। তাই শালিমার গার্ডেনের গোলাপ দেখতে আমি যাইনি। সে গোলাপ যত সুন্দরই হোক না কেন! আমার প্রথমবার পাকিস্তান সফরে বড় অর্জন ছিল, বাংলার মেয়েদের দৌড়ে সোনা জেতা। পাকিস্তানের মাটিতে যখন আমার দেশের জাতীয় পতাকা উড়েছিল আর জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’ গাওয়া হচ্ছিল তখন আমার চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল ঝরছিল। মনে হচ্ছিল পকিস্তানিদের অত্যাচার-নিপীড়নের কিছুটা হলেও প্রতিশোধ নিতে পেরেছি।

আমার দ্বিতীয়বার পাকিস্তান ভ্রমণ ছিল আরও তাৎপর্যপূর্ণ। সেদিন ছিল ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৫। হোটেলে ব্রেকফাস্টের পর লবিতে ‘ডন’ পত্রিকা দেখে আগ্রহভরে হাতে নিয়েছিলাম। ডন পাকিস্তানের অনেক পুরনো পত্রিকা। পাতা ওল্টাতেই স্তম্ভিত আমি। ১৬ ডিসেম্বর, আমাদের বিজয় দিবসকে পাকিস্তানের একজন প্রতিবেদক তুলনা করেছেন ২০১৪ সালে পাকিস্তানের পেশোয়ারে একটা বাচ্চাদের স্কুলে জঙ্গিদের হামলার সঙ্গে। আর আমার মুক্তিযোদ্ধা ভাইদের বানিয়ে ছেড়েছে লুটেরা, ধর্ষক, খুনি। এখানেই শেষ নয়। দুপুরে পাকিস্তান ট্যারিফ কমিশনে মিটিং ছিল। চেয়ারম্যান পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের চৌকস অফিসার। দেখতে অনেকটা আইয়ুব খানের মতো। মিটিংয়ের পর লাঞ্চ খেতে খেতে আস্ত মুরগিতে কামড় দিয়ে তিনি তাচ্ছিল্যভরে বলেছিলেন, ‘হোয়াট ইজ দি সিগনিফিকেন্স অব টুডে ফর ইওর পিপল?’ আমি বলেছিলাম, ‘টুডে ইজ সিক্সটিনথ ডিসেম্বর, আওয়ার ভিক্টরি ডে। আফটার এ লং নাইনথ মান্থস ব্যাটেল, উই ডিফিটেড ইওর পিপল, দি পাকিস্তানিস, অ্যান্ড স্নাসড আওয়ার ভিক্টরি। অ্যান্ড টুডে আই এম এ উইনার, অ্যান্ড হ্যাভ কাম টু দ্যাট ভিক্টরিয়াস ল্যান্ড।’ এরপর বুঝতেই পারছেন। চেয়ারম্যানের মুখ থেকে মুরগি পড়ে গিয়েছিল। পরিস্থিতি হয়ে গিয়েছিল দারুণ থমথমে। ভাগ্যিস মিটিংটা আগে হয়ে গিয়েছিল! না, সেবারও আমি শালিমার গার্ডেনে গোলাপ দেখতে যাইনি।

আমার ভাই সাঈফ মীজানুর রহমান (এসবি এম মিজানুর রহমান) মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে পিরোজপুরের ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। ট্রেজারি তার দায়িত্বে ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ট্রেজারির দরজা খুলে দিয়েছিলেন। অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ তুলে দিয়েছিলেন তাদের হাতে। মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে কাজ করেছিলেন। সেই অপরাধে জিপের চাকায় বেঁধে পুরো শহর ঘুরিয়ে রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় তাকে বলেশ্বরের তীরে দাঁড় করিয়ে পাকিস্তানিরা বলেছিল, ‘বল পাকিস্তান জিন্দাবাদ’। তিনি বলেছিলেন ‘জয় বাংলা’। বুলেটে বুলেটে ঝাঁজরা করে পাকিস্তানিরা তার দেহ ফেলে দিয়েছিল বলেশ্বরের পানিতে। তার মৃতদেহ আমরা পাইনি। আব্বা অ্যাডভোকেট মৌলভী আফসার উদ্দীন আহমেদ নড়াইল মহকুমা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি ছিলেন, তিনি ভাষাসৈনিক, তেভাগা অন্দোলনের আইন পরামর্শক। মুক্তিযুদ্ধকালে আমাদের নড়াইলের বাড়িঘর পেট্রল ঢেলে জ্বালিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানিরা। যুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু প্রথম নড়াইলে গেলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা। বঙ্গবন্ধু হেলিকপ্টার থেকে নেমে আব্বাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। সান্ত্বনা দিয়েছিলেন। বড়দা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দীক্ষিত ছিলেন। তার বিশেষ স্নেহভাজন ছিলেন। বঙ্গবন্ধু সঙ্গে থাকা নেতাদের বলেছিলেন, ‘আফসার ভাইয়ের বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, মিজান শহীদ হয়েছে ওনাকে ঢাকায় একটা বাড়ি দিয়ে দাও।’ সে বাড়ি আমরা পাইনি। এখন সেই নেতাদের কেউ সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য নেই। কিন্তু কথাটা সত্য। তবে সেই ছবিটা আছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ডিরেক্টর ছিলাম। যুদ্ধাপরাধসংক্রান্ত একটা মামলার কারণে আমার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী নিজে আমাকে তার কার্যালয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। ওই মামলার রায়ের দিন তিনি আমাকে ডেকেছিলেন। নিজ হাতে চোখের পানি মুছিয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘তুমি কি জানো আমি নিজে তোমাকে নিয়ে এসেছি?’ তিনি সেদিন আব্বার কথা বলেছিলেন। বড়দার কথা বলতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘মিজানকে এত টর্চার করেছিল যে তার গায়ে চামড়া ছিল না।’ অবাক হয়েছিলাম। দেশের প্রধানমন্ত্রী এটাও জানেন যে, নির্যাতনে আমার ভাইয়ের গায়ে চামড়া ছিল না। কতটা মানবিক তিনি!

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ছিলাম। ‘নড়াইল জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’, ‘নড়াইল জেলার মুক্তিযুদ্ধের কিশোর ইতিহাস’সহ মুক্তিযুদ্ধের ওপর ৫০টির বেশি বই লিখেছি। আমার পরিবারের রাজনৈতিক ইতিহাস, স্বাধীনতাযুদ্ধে বলিদান সত্ত্বেও অবসরে যাওয়ার পর আমি কোনো চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাইনি প্রধানমন্ত্রী তার আগের সচিবকে বলে দেওয়ার পরও। জমিজমা, সুযোগ-সুবিধা, অনুদান-ভাতা কিছুই পাইনি আমরা। তাতে দেশের প্রতি আমার ভালোবাসা বিন্দুমাত্র কমেনি। কারণ লোক দেখানো ছিঁচকাঁদুনে ভালোবাসা তো এটা নয় যে, যখন যেভাবে সুবিধা হবে কাঁদব। হ্যাঁ, সম্মান পেয়েছি। আমার ভাইকে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়েছে। যাক, আমার আজকের লেখা নিজের প্রচারের জন্য নয়। প্রসঙ্গ অন্য। একজন কবি, তিনি আবার একটা বড় পদে আসীন, কবিদের নিয়ে একটা দল করতে চেয়েছেন তার অফিসের ১ বৈশাখের অনুষ্ঠানে। আগামী নির্বাচনে গোলাপ ফুল মার্কায় ভোট চেয়েছেন। জাতীয় ফুল শাপলা, গন্ধরাজ, রজনীগন্ধা, জবা বাদ দিয়ে ভোট চাইলেন আইয়ুব খানের গোলাপ ফুল প্রতীকে। চাইতেই পারেন। মনে যা থাকে তা একসময় বেরিয়েই আসে। সে গণতন্ত্রের জন্য কান্নাকাটি, বঙ্গবন্ধুর জন্য লোক দেখানো যত কান্নাকাটিই হোক না কেন! তিনি কবিদের নিয়ে দল করতে চাইলেও অন্য বিষয়ে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন। উনি কি বিষয়টা ওন করেন না? তাহলে পুরস্কারটা নিলেন কেন, টাকাটাও? পুরস্কার দেওয়া কি ভুল হলো?

বাংলাদেশে সংস্কৃতির চর্চা করার জন্য বাংলা একাডেমি আছে, শিল্পকলা একাডেমি আছে, এমন আরও অনেক প্রতিষ্ঠান আছে। কে কোন কাজ করবে তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে। এখন যদি সব প্রতিষ্ঠান নিজেদের কাজ বাদ দিয়ে নববর্ষ পালন বা ২৬ মার্চ পালনে মেতে ওঠে তাহলে তো সমস্যা! দেদার খাওয়া-দাওয়া, অপচয়, বক্তৃতা দিয়ে মিডিয়া কাভারেজ পাওয়ার জন্য এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করাই যেতে পারে, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে-  কেন? এতে রাষ্ট্রের কী উপকার হচ্ছে মিডিয়া ক্রেজি লোকের ক্রেজ মেটানো ছাড়া! বাংলাদেশে এমন অনেক অফিস আছে যেখানে ঠিকমতো বসার জায়গা নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গাদাগাদি করে বসেন। কষ্ট করে কাজ করেন। বেশি দূর যাওয়ার দরকার নেই, এক অর্থ মন্ত্রণালয়ই জায়গার অভাবে কত জায়গায় ছড়িয়ে আছে, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়েরও একই অবস্থা। কিন্তু এ দেশে এমন অফিসও আছে, আর তাদের এত অকারণ জায়গা যা দেখলে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। আর সেসব অফিসের শীর্ষব্যক্তিদের বেতন-ভাতার অঙ্ক শুনে অবাক হতে হয়। দুই দিন পরপর বিদেশ যান তারা। উচ্চ বেতন পান, আমরণ চিকিৎসা ভাতা পান স্ত্রীসহ। এ দেশে চিকিৎসা হলেও তারা মাস মাস বিদেশ গিয়ে জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চিকিৎসা করান। যদি কখনো ঠেকে চিকিৎসা করাতে হয়, করান একজন নেত্রীর বিশেষ পছন্দের হাসপাতালে। পরের টাকা খরচ করতে তো কোনো সমস্যা নেই। একাধিক গাড়ি, বাড়ি, দেদার সুবিধা, চাকরবাকর, দারোয়ান, মালী, বাবুর্চি তারা পান। জিনিসপত্র সিসি ক্যামেরার কথা নাইবা বললাম। শুধু হাতি আর ঘোড়াটাই যা দেওয়া হয়নি। তবে যা দেওয়া হয়েছে তা শুধু এক ঘোড়া নয়, ঘোড়ার লটবহর টানার মতোই। বিনিময়ে তারা যা দেন তা ষোলো আনার এক আনাও নয়। আবার তারাই নানান দিবস পালন করে অপচয়ের ফোয়ারা ছুটিয়ে দিচ্ছেন। আর বালকসুলভ বক্তৃতা দিয়ে মিডিয়ার হেডলাইন হচ্ছেন। আর মিডিয়াও শীর্ষব্যক্তিকে রেখে মিডিয়াক্রেজি ব্যক্তির খবর ছাপছে দেদার।

এ দেশে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত লোকের সংখ্যাই বেশি। আমি বলছি না যে, সব স্তরের কর্মকর্তা একই বেতন পাবে। উচ্চ বা গুরুত্বপূর্ণ পদে যারা আসীন তারা বেশি বেতন পাবেন, ঠিক আছে। কিন্তু কত বেশি। একটা হারমোনি তো থাকবে! এটাও বলছি না যে, আইয়ুব খানের মার্কা গোলাপ ছিল বলে গোলাপ পচে গেছে। দোষ ফুলের নয়, দোষ ব্যক্তির। বিষয়টা হচ্ছে মানসিকতার, যিনি ব্যবহার করছেন তার। আমি বলি, আমি বড় দেশপ্রেমিক, আমি মুক্তিযোদ্ধা, আমি কণ্ঠযোদ্ধা, আমি কলমযোদ্ধা। পৃথিবীর যত যোদ্ধা আছে সবই আমি আর মার্কা আমার আইয়ুবশাহির গোলাপ! কেমন দেখায়! থলের বেড়াল বেরিয়ে আসে না!

গোলাপ ফুল মার্কা চেয়েই থামেননি তিনি, প্রেমে এতটাই গদগদ হয়ে গেছেন যে, নির্বাচনে জিতলে কবিতার তাজমহল বানাতে চাইলেন। কবিবরের এলেম আছে বলতে হবে! এ দেশে প্রতিদিনই নতুন নতুন দেশপ্রেমিক, নতুন নতুন আওয়ামী লীগার জন্ম নিচ্ছে। যারা বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর উল্লাস করেছেন, এরশাদের কবিতা লিখে দিয়েছেন, খালেদার লেজুড়বৃত্তি করেছেন এখন তাদের অনেকেরই বড় বড় চেয়ার। যাদের বয়স আশি ছুঁই ছুঁই, যাদের অতীত সর্বদলীয় তারা বড় বড় পোস্টে। পত্রিকার পাতা খুললেই অনেকের বড় বড় পোস্টে পদায়নের খবর পাচ্ছি প্রতিনিয়ত। যাদের যোগ্যতা আছে, তাদের কথা বলছি না। কিন্তু এ দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা, যাদের পরিবার ত্যাগ স্বীকার করেছে, মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছে সব রকম যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এসব সুযোগ-সুবিধা তাদের ভাগ্যে কমই জুটছে।

একটা কথা মনে রাখতে হবে, মুক্তিযুদ্ধকালে ভারতে গেলেই কিন্তু তিনি মুক্তিযোদ্ধা বা স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ হয়ে যান না। মুক্তিযুদ্ধে এক কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের অধিকাংশ পরিস্থিতির কারণে গিয়েছিল, আদর্শের কারণে গিয়েছিল অল্প কিছু মানুষ। আর পরে কেউ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কাজের সুযোগ পেলেই যে তিনি বড় বঙ্গবন্ধুপ্রেমিক তা ভাবারও কোনো কারণ নেই। বঙ্গবন্ধু উদার দিল খোলা মানুষ ছিলেন। অনেককেই তিনি কাজের সুযোগ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শহীদ হওয়ার পর কার কী ভূমিকা ছিল, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে শহীদ হয়েছিলেন, নাকি পালিয়ে গিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্য লড়াই করেছিলেন, নাকি গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করল তাদের সঙ্গে ছিলেন তাও দেখার বিষয়। একটা কথাই বলতে চাই, গুরুত্বপূর্ণ পদে নিরপেক্ষ আর যোগ্য লোক থাকা উচিত। তাদের কথার সঙ্গে কাজের মিল থাকা দরকার। প্রতিষ্ঠানের মধ্যে থেকে প্রতিষ্ঠানের বিরোধিতা করা স্ববিরোধিতা। কারণ যে করে সে ওই প্রতিষ্ঠানের অংশ, যে কোনো কাজের জন্য সমানভাবে দায়ী। প্রতিষ্ঠান বদলাবার দায়িত্ব তারও। যদি সেটা না পারা যায় পদত্যাগ করা উচিত। প্রতিষ্ঠানের মধ্যে থেকে প্রতিষ্ঠানের বিরোধিতা করলে, আর সেটা যদি দিনের পর দিন মেনে নেওয়া হয় তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা আর বৈধতা প্রমাণ হয়। তাতে প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পরিবর্তে প্রতিষ্ঠানের পক্ষেই কাজ করা হয়। প্রশ্নবিদ্ধ করা হয় নিজেকেই।

আর সবশেষ কথা, ত্যাগী মানুষের মূল্যায়ন হওয়া দরকার। দরকার যোগ্য মানুষদের যথাস্থানে বসাবার। দেশপ্রেমিক মানুষ দরকার। দরকার সমতার।

                লেখক : কলাম লেখক।

সর্বশেষ খবর