বুধবার, ১২ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়

অভিযোগের তদন্ত হোক

স্বাস্থ্য খাত দেশবাসীর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার বদলে কর্তাব্যক্তিদের পকেটের স্বাস্থ্য স্ফীত করার দিকে ব্যস্ত কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। স্বাস্থ্য খাত নিয়ে ঘটছে একের পর এক কাণ্ড; যাকে কেউ তুঘলকি কাণ্ড আবার কেউ বলছেন আরব্য উপন্যাসের থিফ অব বাগদাদের আসর। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বালিশ কাহিনিকেও হার মানিয়েছে সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে যন্ত্রপাতি কেনার ঘটনা। এ হাসপাতালের ১৪ তলা ভবনের খবর না থাকলেও সেই হাসপাতাল ভবনের জন্য যে যন্ত্রপাতি কেনা হবে তা দেখতে ও যাচাই-বাছাই করতে জার্মানি যাচ্ছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। তারা জার্মানির লুবেক শহরের ড্রাগারওয়ের্ক কোম্পানির কারখানা পরিদর্শন করবেন। যেসব মেশিন আনা হবে সেগুলো কীভাবে স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে সে বিষয়ে ধারণা অর্জনের উদ্দেশ্যে কর্মকর্তাদের এই সফর রূপপুরের বালিশ কাহিনিকেও হার মানিয়েছে। কারণ, এই হাসপাতালের ১৪ তলা ভবন নির্মাণ তো দূরের কথা, এখনো অনুমোদনই পায়নি। অথচ সরকারি অর্থের অপচয় করে দেদার মেডিকেল যন্ত্রপাতি কিনছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, যা তুঘলকি কারবার বলে বিবেচিত হওয়ার যোগ্য। হাসপাতাল ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার আগেই এর মেডিকেল যন্ত্রপাতি কেনার নামে ঘটেছে পুকুর চুরির ঘটনা। অভিযোগ উঠেছে, ৮০ লাখ টাকার যন্ত্র কেনা হয়েছে ৭ কোটি টাকায়, যেগুলো কোনো কাজেই আসছে না! উল্টো এগুলো অব্যবহৃত থাকতে থাকতে অকেজো হয়ে পড়েছে। কোনো কোনোটি একেবারেই নষ্ট হয়ে পড়েছে। কোনো কোনো যন্ত্রপাতিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন করে আবার সেগুলো কেনা হচ্ছে, যাতে শুধু সরকারের অর্থেরই অপচয় হচ্ছে। হাসপাতাল ভবন নির্মাণের আগে চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়ার শামিল। হাসপাতালের জন্য কেনা মেশিন ব্যবহার না করে ফেলে রাখার পেছনে কোনো সৎ উদ্দেশ্য যে নেই তা দিনের আলোর মতো সত্য। প্রশ্ন হলো, যারা জনগণের ট্যাক্সের টাকা অপচয় ও লুটপাটের মচ্ছব শুরু করেছেন তাদের এ অধিকার কে দিয়েছে? হাসপাতাল ভবন নির্মাণের আাগেই মেশিনপত্র কেনার অতিআগ্রহের আসল উদ্দেশ্যটা কী? আমরা আশা করব এ বিষয়গুলো প্রয়োজনে তদন্ত করা হবে। এসব অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের জবাবদিহির আওতায় আনাও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর