শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ধর্ষকবান্ধব ভূমিকা

বিপথগামীদের বিরুদ্ধে কঠোর হোন

পাবনায় দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের শিকার এক গৃহবধূকে থানায় এনে জোর করে এক ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন একজন করিৎকর্মা ওসি। ধর্ষণের মামলার আসামিকে গ্রেফতারের বদলে পাবনা সদর থানার ওসি ধর্ষিতার সঙ্গে তার বিয়ে দিয়ে প্রকারান্তরে ধর্ষকদের রক্ষা করার অপকৌশলের প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। স্মর্তব্য, ২৯ আগস্ট রাতে জনৈক আকবর আলীর ছেলে রাসেল আহমেদ নামের এক নরপশু তার সহযোগীকে নিয়ে তিন সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে অপহরণ করে। তাকে চার দিন অজ্ঞাত এক জায়গায় আটক রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তারা। গৃহবধূ কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে এসে স্বজনদের জানান এবং তারা মুমূর্ষু অবস্থায় ৫ সেপ্টেম্বর তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। ৬ সেপ্টেম্বর গৃহবধূ পাবনা থানায় ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ নিয়ে গেলে মহাক্ষমতাধর ওসি এজাহার গ্রহণ না করে ধর্ষক দলের প্রধান রাসেলের সঙ্গে ধর্ষিতা মহিলাকে বিয়ে দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি তদন্তে কমিটি গঠন করেন এবং ধর্ষকবান্ধব ওসি উবায়দুল হক ও এসআই একরামুল হক জুয়েলকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেন। পুলিশ ইতিমধ্যে ধর্ষক দলপতি রাসেল ও তার সহযোগী স্থানীয় একজন তথাকথিত রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেফতার করেছে। বিষয়টি এরই মধ্যে হাই কোর্টের নজর এসেছে এবং তারা বলেছে, বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রশাসন এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। পাবনা সদর থানার ওসির ধর্ষকবান্ধব ভূমিকা পুলিশের মর্যাদা ও সুনামে যে চুনকালি লাগিয়েছে তা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা বিশ্বাস করি, পুলিশ সদস্যদের সিংহভাগ এজন্য লজ্জিত এবং তারাও চান যাদের বিরুদ্ধে ধর্ষকবান্ধব ভূমিকার অভিযোগ উঠেছে তাদের প্রাপ্য বিভাগীয় শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। সবারই জানা, ধর্ষণ একটি ফৌজদারি অপরাধ, যার বিচার সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী আদালতেই হতে পারে। দেশের আইনে কিংবা পুলিশের বিধিবিধানে কোথাও ধর্ষকবান্ধব ভূমিকা পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। একজন গৃহবধূকে অপহরণ এবং আটকে রেখে কয়েক দিন ধরে ধর্ষণের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনার বদলে অপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা যারা করেছেন তারা পুলিশ হিসেবে কোনোভাবেই থাকার অধিকার রাখেন না। নিজেদের ভাবমূর্তির স্বার্থে পুলিশ প্রশাসন বিপথগামী সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর হবে- এমনটিই প্রত্যাশিত।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর