সিলেটের সুরমা নদীর সৌন্দর্য দেখতে এসে বাংলাদেশ সফররত তিন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য নদীর পাড় পরিচ্ছন্নতার অভিযানে অংশ নেন। সিলেট শুধু নয়, বাংলাদেশের মানুষকে শিক্ষা দিলেন- এত সুন্দর নদ-নদীর অধিকারী যারা, তারা তাদের নদ-নদী-জলাশয়গুলোয় ময়লা ফেলে নোংরা করে রাখবে তা বাঞ্ছনীয় নয়। সবারই জানা, সিলেটের ঐতিহ্যের তিন স্মারক কিনব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি আর চাঁদনীঘাটের সিঁড়ি। সুরমাপাড়ের এই তিন স্থাপনা মুগ্ধ করে সিলেট ভ্রমণে আসা তাদের। পর্যটকদের পাশাপাশি খোলা হাওয়ায় সময় কাটাতে প্রতিদিন বিকালে এসব স্থাপনার কাছে ভিড় করেন নগরবাসী। কিন্তু পর্যটক আর স্থানীয়দের ফেলা ময়লা-আবর্জনায় সুরমাপাড়ের পরিবেশ নোংরা হয়ে ওঠে। সোমবার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ক্লিন সুরমা গ্রিন সিলেট’-এর কর্মীরা সুরমাপাড়ের সৌন্দর্য দেখাতে নিয়ে যান সিলেট সফররত ব্রিটিশ তিন এমপিকে। এ সময় সুরমাপাড়ের চাঁদনীঘাট এলাকায় ময়লা পরিষ্কারে নেমে পড়েন ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টির ডেপুটি চেয়ারম্যান পল স্কালি এমপি, কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অ্যান মারগারেট মেইন এমপি এবং বব ব্ল্যাকম্যান এমপির নেতৃত্বে ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দল। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তারা সুরমাপাড়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শেষে ব্রিটিশ এমপিরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বদলে যাচ্ছে আবহাওয়া। এ কারণে গোটা বিশ^ আজ হুমকির মুখে। নদীতে ময়লা ফেলার কারণে নদীর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নে যুক্তরাজ্য সরকারের সহযোগিতারও আশ্বাস দেন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্যরা। সুরমাপাড়ে ফেলে রাখা বর্জ্য-আবর্জনা নিজেরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে তিন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য প্রকারান্তরে আমাদের দেশের জনপ্রতিনিধিদের দায়দায়িত্বও চিহ্নিত করে গেলেন- এমনটি বললেও ভুল হবে না। সিলেট সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট এলাকার কাউন্সিলর, মহানগরের মেয়র এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্য সচেতন হলে সুরমার পাড়ে ময়লা-আবর্জনা ফেলা কিংবা তার ভাগাড় গড়ে ওঠা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আমরা আশা করব, তিন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্যের সুরমাপাড় পরিচ্ছন্ন করার কর্মকান্ড আমাদের জনপ্রতিনিধিদের নদ-নদী সুরক্ষার ব্যাপারে তাগিদ সৃষ্টি করবে। তাদের সচেতনতায় রক্ষা পাবে দেশের সব নদ-নদী-জলাশয়।