রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

রাজনীতিতে ফ্রাংকেনস্টাইনের দানব

নঈম নিজাম

রাজনীতিতে ফ্রাংকেনস্টাইনের দানব

ফ্রাংকেনস্টাইন ছিলেন এক বড় বিজ্ঞানী। রাত-দিন বিভিন্ন বিষয়ে তিনি গবেষণা করতেন। গবেষণা করতে করতে হঠাৎ একদিন আবিষ্কার করলেন মৃত মানুষকে জীবিত করা সম্ভব। ফ্রাংকেনস্টাইন মহাখুশি। চমকে দেবেন বিশ্বকে। সিদ্ধান্ত নিলেন একজন মৃত ব্যক্তির ওপর পরীক্ষা চালানোর। সফলও হলো পরীক্ষা। মৃত ব্যক্তি জীবিত হলো। কিন্তু যেভাবে ফ্রাংকেনস্টাইন চাইলেন তা হলো না। মানব তৈরি করতে পারলেন না। ফ্রাংকেনস্টাইন সৃষ্টি করলেন ভয়ঙ্কর শক্তিশালী এক দানব। দেখতে ভয় ধরানো কুৎসিত ও মানবিকতাহীন। তাকালেই সুস্থ মানুষ ভয় পাবে। আঁতকে উঠলেন ফ্রাংকেনস্টাইন। গভীর চিন্তায় পড়লেন, কী করবেন এই দানব নিয়ে! ঠিক এই সময় দানবটি এসে তার সামনে হাজির। নির্দেশ চাইলেন খারাপ কিছু করার। দানবের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেন ফ্রাংকেনস্টাইন। এই ব্যবহারকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেনি দানবটি। নিজের স্রষ্টার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে চলে যায় বনে। তারপর সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিশোধ গ্রহণের। দানবটি প্রথমেই হত্যা করল তার সৃষ্টির সহযোগী ড. নীল ও এক আয়াকে। এরপর হত্যা করে তার সৃষ্টিকর্তার ভাইকে। চলতেই থাকে তার নিষ্ঠুর হত্যালীলা। একপর্যায়ে ফ্রাংকেনের বিয়ের রাতে আক্রমণ করে দানব। হত্যা করে তার স্ত্রীসহ পরিবারের বাকি সদস্যদের। দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে এবার নিজের তৈরি দানবকে হত্যার জন্য ধাওয়া করেন ফ্রাংকেনস্টাইন। ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত অবসন্ন ফ্রাংকেন মারা যান। স্রষ্টার মৃত্যুর পর আত্মহত্যার চিন্তা করে প্রথম দানবটি। তারপর হারিয়ে যায়। কেউ কোনো দিন আর দেখেনি তাকে। বৈজ্ঞানিক এই কল্পকাহিনি কখনো কখনো বাস্তব হয়ে আসে আমাদের সামনে। নিজেদের অজান্তেই রাজনীতিবিদরা ফ্রাংকেনস্টাইনের দানব তৈরি করেন। এই দানবরাই বারোটা বাজিয়ে দেন রাজনীতিবিদদের। ইতিহাসের ক্ষণে ক্ষণে তা-ই দেখি। অতীত ও বর্তমান সব সময় একই চিত্র।

একটু পেছনে যেতে চাই। মুহসীন হলের টিভি রুমের সামনের সেভেন মার্ডারের কথা কারও মনে আছে কি? ১৯৭৪ সালের ৪ এপ্রিল রাত ২টা ৪ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত এই নিষ্ঠুর হত্যালীলা ক্ষমতাসীনদের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল। খুনের শিকার সবাই ছিলেন সূর্যসেন হলের আবাসিক ছাত্র। খুনিদের মূল টার্গেট ছিল নাজমুল হক কোহিনুর। রাতে কোহিনুর বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন সূর্যসেন হলের ৬৩৫ নম্বর রুমে। অনেক রাত পর্যন্ত সবাই আড্ডা দিয়ে যার যার রুমে চলে যান। রাতের সুনসান ক্যাম্পাসে হঠাৎ মুহসীন হলের দিকে কয়েকটি গুলির আওয়াজ শোনা যায়। তারপর আবার সবকিছু শান্ত। গুলির শব্দে জেগে ওঠা ছাত্ররা আবার ঘুমানোর চেষ্টা করেন। এ সময় ১৫ জনের অস্ত্রধারী গ্রুপ প্রবেশ করে সূর্যসেন হলে। প্রত্যেকের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র। তারা প্রথমে ধাক্কা দেয় ৬৩৪ নম্বর রুমে। ডাকতে থাকে কোহিনুরের নাম ধরে। চিৎকার করতে থাকে, দরজা খোল। ভিতর থেকে বলা হলো কোহিনুর পাশের রুমে। অস্ত্রধারীরা এবার পাশের রুমে ধাক্কাতে থাকে। লাথি মারতে থাকে দরজায়। ভিতর থেকে বের হয়ে আসেন কোহিনুর। তার পেছনে আরও তিনজন। তাদের নির্দেশ দেওয়া হয় হাত তুলে দাঁড়ানোর জন্য। সবাই নির্দেশ পালন করল। এরপর ৬৪৮ নম্বর রুম থেকে আরও তিনজনকে বের করে আনে সন্ত্রাসীরা। সবশেষে ২১৫ নম্বর রুম থেকে আরেকজনকে বের করার চেষ্টা করে। কিন্তু পরিস্থিতি অনুধাবন করে সেই ছাত্রটি লাফ দিয়ে নিচে পড়ে পালিয়ে যায়। জানালা দিয়ে নিচে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। তারপর সাতজনকে হল থেকে বের করে নিয়ে আসে মুহসীন হলে টিভি রুমের সামনের করিডোরে। কোহিনুর পরিস্থিতি অনুধাবন করেন। অনুরোধ করেন তাদের না মারতে। কোহিনুর বার বার বলতে থাকেন, এ বিরোধ রাজনৈতিক। আর কোনো দিন কিছু নিয়ে নাক গলাব না। কিন্তু কে শোনে কার কথা। অস্ত্রধারীদের চোখেমুখে তখন খুনের নেশা। কারও কথা শোনার সময় নেই। মুহূর্তেই গর্জে ওঠে তাদের হাতে থাকা অস্ত্র। মুহসীন হলের টিভি রুমের সামনের করিডোরে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেগুলো মুহূর্তেই লাফিয়ে পড়ে। সবার মৃত্যু নিশ্চিত করে রাত ২টা ২৫ মিনিটে খুনিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই তা-বলীলার সময় পুলিশ আসেনি। লাশগুলো পড়ে ছিল দীর্ঘ সময়। পুলিশ আসে ঘটনার অনেক পরে ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরেই ছিল এই নিষ্ঠুর হত্যাকান্ড। পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম প্রধানের নাম। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার হন। বিচারে তার মৃত্যুদ- হয়। জিয়াউর রহমান এসে মুক্ত করেন শফিউল আলম প্রধানকে। লাগিয়ে দেন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রাজনীতিতে।

কালীগঞ্জের ইমদুর কথা কারও কি মনে আছে? ফ্রাংকেনস্টাইনের রাজনীতির ভয়ঙ্কর আরেক নাম। ১৯৮২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মিন্টো রোডে যুবমন্ত্রী কাশেমের বাড়ি থেকে ইমদু আটক হন। একজন মন্ত্রীর বাড়ি থেকে এভাবে আসামি গ্রেফতার বাংলাদেশের রাজনীতিতে ছিল নজিরবিহীন। ইমদুকে আটকে দুঃসাহসের পরিচয় দেয় পুলিশ। ১৯৭৭ সাল থেকে রাজধানীর আন্ডারওয়ার্ল্ডে ইমদু ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। প্রথম জীবনে ইমদু জাসদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু সহযোগী আলী হোসেনকে হত্যার কারণে ইমদুকে জাসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। ইমদু যোগ দেন বিএনপিতে। যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। দিনদুপুরে খুন-খারাবিতে ইমদু রেকর্ড গড়ে তোলেন। আলী হোসেন হত্যার প্রতিবাদ সভায় হামলা করেও তিনজনকে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি পরিবারকে তিনি কালীগঞ্জ থেকে ভিটেমাটি-ছাড়া করেন। নিজ হাতেই গুলি চালাতেন ইমদু। একজন নিষ্ঠুর হত্যাকারী হিসেবে পুলিশের খাতায় নাম ছিল তার। এর পরও কারও কিছু করার ছিল না। কারণ ইমদু ছিলেন প্রভাবশালী মন্ত্রীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে। এমনকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও তার ছিল আলাদা সম্পর্ক। ১৯৮২ সালের ৪ আগস্ট ইমদুর ফাঁসি কার্যকর হয়। এর আগে সামরিক আদালতে তার ফাঁসির রায় হয়। ইমদুর মতো নিষ্ঠুর খুনের রাজনীতিতে আরেকটি নাম গালকাটা কামাল। ’৭৪ সালে আন্ডারওয়ার্ল্ডে কামালের প্রবেশ। জীবন শুরু হয়েছিল এমপি নুরুল হক হত্যার অভিযোগ নিয়ে। তার বাড়ি ছিল শরীয়তপুরে। ডামুড্ডায় খুন হন এমপি নুরুল হক। সেই অভিযোগ মাথায় নিয়ে ঢাকায় এসে খুনের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন কামাল। অথচ এই কামাল ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। ভালো গান গাইতেন। আবার গান শেখাতেনও। রাজনীতির আশ্রয়-প্রশ্রয়ে অপরাধজগতে প্রবেশের পর ঢাকায় যুবদল নেতা জাফর, ফিরোজ, রানাসহ অনেক খুনের সঙ্গে বেরিয়ে আসে তার নাম। খুন, গুলি করা কামালের কাছে ছিল নেশার মতো। গালকাটা কামাল আটক হন ঢাকাই সিনেমার একজন প্রযোজকের আশ্রয় থেকে। পরে তার ফাঁসি হয়।

কামাল ও ইমদুর মতো রাজনীতির আরেক ফ্রাংকেনস্টাইনের দানবের নাম খুলনার এরশাদ শিকদার। সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ছিলেন। জাতীয় পার্টি, বিএনপি, আওয়ামী লীগ সব দলের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন। পুলিশ থেকে শুরু করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন, রাজনীতিবিদ সবাই যেতেন তার আড্ডার আসরে। ঢাকায় এসে বুড়িগঙ্গা নদীতে এখানকার মাফিয়াদের নিয়ে আসর জমাতেন। খুলনায় এরশাদ শিকদার খুন করেন ১৫ জনকে। খুনের পর ভৈরব নদে লাশ ফেলে দেওয়া হতো জমাট সিমেন্টের বস্তা বেঁধে। অবশেষে ধরা পড়লেন নিষ্ঠুরভাবে যুবলীগের একজন নেতাকে হত্যার দায়ে। যুবলীগ নেতার পরিবার বিষয়টি রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারক মহলের দৃষ্টিতে আনে। তারপর সর্বোচ্চ মহলের নির্দেশে এরশাদ শিকদার আটক হন। পুলিশি হেফাজতে বেরিয়ে আসে নিষ্ঠুর সব খুন ও গুমের কাহিনি। হিন্দি সিনেমার ভয়াবহ কাহিনিগুলোকে হার মানায় সবকিছু। দীর্ঘ সময় মামলা চলার পর আদালতের রায়ে তার ফাঁসি হয়।

এরশাদ শিকদারের মতো খুনিও আমাদের রাজনীতিরই তৈরি। রাজনীতির মাফিয়ারা একসময় আত্মপ্রকাশ করেছিল সারা দেশে। একসময় পুরান ঢাকায় আলোচিত ছিলেন আকবর শেঠ, আলীজানসহ অনেকে। সাদা ধোপদুরস্ত কাপড় পরা আকবর শেঠকে ’৯১ সালে প্রতিপক্ষ খুন করে। তিব্বতও একসময় পুরান ঢাকায় আলোচিত অবস্থানে ছিলেন। তিব্বত খুন হন ইংলিশ রোড পতিতালয়ে। আমাদের রাজনীতির নষ্টভ্রষ্ট সেসব অধ্যায় এখনো শেষ হয়নি। রাজধানী ঢাকায় নতুন করে ফিরে এসেছে মাফিয়ারা। রাজনীতির নামে তৈরি হচ্ছে অপরাধজগৎ। একজন জি কে শামীম, খালেদ রাতারাতি তৈরি হননি। হাজার হাজার কোটি টাকার ঠিকাদারি শামীম কীভাবে একা নিয়ন্ত্রণ করতেন? কারা তার পাশে ছিল? কারা শেয়ার পেত? তার গডফাদার কারা? পার্টনার কারা? সব বের করতে হবে। কোন মন্ত্রী, এমপি, শীর্ষ নেতাদের অর্থ দেওয়া হতো বেরিয়ে আসছে। একইভাবে বের হচ্ছে খালেদের অতীত ও বর্তমান। রাজধানীর এত ক্যাসিনো খালেদ একা চালাতেন না। বাকিগুলো কারা নিয়ন্ত্রণ করত? তারা এখন কোথায়? প্রশ্ন অনেক। দেশবাসী উত্তরও জানতে চায়।

কবি জয় গোস্বামী লিখেছেন- ‘ছোট যারা তারাই দোষ করে। বড়দের দোষ ধরতে নেই। বড়রা নেতা।’ এই বড়দেরও ধরতে হবে। এই ঢাকা শহরে শত কোটি টাকার অবৈধ ক্যাসিনোর ভাগবাটোয়ারা কোথায় কোথায় যেত এত দিন? খালেদ একটা বসিয়েছিলেন। বাকিগুলোর মালিক কারা ছিল? সবার নাম বের করতে হবে। বাস্তবতাকে এড়ানোর সুযোগ নেই। প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে কারা সন্ত্রাস করত সবাই জানে। চাঁদাবাজির বংশ বিস্তার এক দিনে হয়নি। ৮৬ কোটি টাকার ফেয়ার শেয়ার দাবি হঠাৎ আসেনি। চলছে অনেক দিন থেকে। কথায় আছেÑ চোরের দশ দিন গেরস্থের এক দিন। সেই দশ দিন পর এগারো দিনে চোর ধরা পড়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ছাত্রনেতাদের পৃষ্ঠপোষক কারা? ছাত্রলীগের ঐতিহ্য ও সুনাম নষ্টের আড়ালের গডফাদার কারা? কমিটি গঠনের পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলের নির্বাচন, ইডেন কলেজে প্রভাব বিস্তারে আওয়ামী লীগের অনেক নেতার নাম শুনি। নিরপেক্ষ তদন্ত দরকার। সময় এসেছে অনেক কিছু বের করার। বঙ্গবন্ধুকন্যা অ্যাকশন শুরু করেছেন। অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই অ্যাকশন অব্যাহত রাখতে হবে।

এখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শেষ ঠিকানা শেখ হাসিনা। তাঁর ইমেজের ওপর ভর করেই আওয়ামী লীগ বার বার ক্ষমতায়। সেই ইমেজকে নষ্ট করার অধিকার কারও নেই। রাজনীতির নষ্টভ্রষ্টদের উৎপাত বন্ধ করতে হবে। আওয়ামী লীগের আগামী কাউন্সিলে বাদ দিতে হবে নষ্টদের।

রাজনীতির নামে ফ্রাংকেনস্টাইনের তৈরি অপরাধীদের মনে রাখা দরকার- বেলা শেষে কেউ কারও থাকে না। সবাই ইয়া নাফসি ইয়া নাফসি করে। শেষ বিচারের দিন হাশরের ময়দানে কারও দিকে তাকানোর সময় থাকে না কারও। আল্লাহ জীবৎকালেই মানুষকে হাশরের ময়দানের নমুনা দেখিয়ে দেন। খালেদ, জি কে শামীমসহ যুবলীগের অনেক নেতা এখন দেখতে পাচ্ছেন। আরও অনেক ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগ নেতা দেখতে পাবেন আগামীতে। ফ্রাংকেনস্টাইনের দানবের পরিণাম শেষ পর্যন্ত কারও জন্য ভালো হয় না। কারণ দানব শুরুতেই তার স্রষ্টাকে শেষ করে দেয়। তারপর নিজেও শেষ হয়ে যায়।

এরশাদ শিকদার স্বপ্নের ‘স্বর্ণকমল’ নির্মাণ করলেও থাকতে পারেননি। শেষ সময়ে তার সঙ্গে কেউ ছিল না। তাকেও বিদায় নিতে হয়েছিল দুনিয়া থেকে। অবৈধভাবে এত অর্থবিত্ত, ক্ষমতা তৈরি করে কী হবে? জীবনের ভরসা নেই এক সেকেন্ডের। তার পরও কেন এত লড়াই করতে হবে? দানবের রাজনীতি তৈরি করতে হবে? খারাপ সময়ে কেউ পাশে থাকে না। কষ্টে অর্জিত বাংলাদেশের মানুষ রাজনীতির স্বাভাবিক সুস্থধারা দেখতে চায়। অস্ত্রবাজি, সন্ত্রাস আর চাঁদাবাজির রাজনীতির চিরতরে কবর চায়। রাজনীতির নামে পদ-পদবি বিক্রির কবর চায়। প্রবীণ রাজনীতিবিদ তোফায়েল আহমেদ কিছুদিন আগে বলেছেন, রাজনীতি এখন রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। আসলেও তাই। দুর্বৃত্তায়ন রাজনীতির সর্বনাশ করেছে। সুস্থধারার রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে হবে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদদের কাছে। অন্যায়কারী, দখলবাজ, অসৎ, দুর্নীতিবাজদের কবল থেকে রাজনীতিকে মুক্ত করতে হবে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার কোনো বিকল্প নেই। তাই চিরতরে কবর হোক রাজনীতির নামে সব নষ্টামির।

লেখক : সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।

সর্বশেষ খবর