সোমবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

চাই নিরাপদ সড়ক

আমাদের দেশে ইদানীং সড়ক দুর্ঘটনা মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন দিন নেই যেদিন সংবাদপত্রে বা অন্যান্য প্রচারমাধ্যমে এক বা একাধিক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ প্রচারিত হয় না। এমন একটা দিন নেই যেদিন পথ দুর্ঘটনায় নিহত-আহতের আপনজনের হাহাকারে আকাশ-বাতাস ভারাক্রান্ত হয় না। তবে এও সত্য, প্রচন্ড গতিনির্ভর বর্তমান প্রগতির যুগে দুর্ঘটনা থাকবেই। মানুষ তো আর কবি দ্বিজেন্দ্রলালের রচিত সেই ‘দেশপ্রেমিক নন্দলাল’ নয় যে দুর্ঘটনা থেকে বাঁচার জন্য ঘরের কোণে ঘাপটি মেরে বসে থাকবে। মানুষ গতির আবেগ এবং প্রয়োজনের খাতিরে পথে-প্রান্তরে, জলে-স্থলে অন্তরিক্ষে ছুটে বেড়াবেই এবং তাকে মাঝে-মধ্যে দুর্ঘটনার মোকাবিলাও করতে হবে। সতর্কতার মধ্যেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ দুর্ঘটনার কোনো ব্যাকরণ নেই, নেই কোনো রীতি বা নিয়ম। কিন্তু সাবধানতার দ্বারা দুর্ঘটনার সংখ্যা ও সম্ভাবনা অবশ্যই কমানো সম্ভব। কথায় আছে, ‘সাবধানের মার নেই’। সংশ্লিষ্টরা যথেষ্ট সচেতন থাকার পরও যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তবে সেখানে কিছুটা হলেও সান্ত¡না থাকে। কিন্তু বেপরোয়া অসতর্কতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য যখন কোনো দুর্ঘটনা ঘটে এবং তার ফলে নিভে যায় এক বা একাধিক জীবনদীপ তখন আর সান্ত¡নার কোনো স্থান থাকে না। ইদানীং যেসব সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে সেসবের মূলে দেখা যাচ্ছে চালকদের বেপরোয়া মনোভাব, অসাবধানতা ও ব্যাপক দুর্নীতি। বিশেষ বিশেষ মহলের চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতাও এর অন্যতম প্রধান কারণ। প্রথমেই ধরা যাক রাস্তাঘাটের কথা। আমাদের দেশের রাস্তাঘাটগুলোর অবস্থা মোটেই উন্নতমানের নয়। বেশির ভাগ পথঘাটই ভাঙাচোরা। সেতু, কালভার্ট প্রভৃতি ভয়ঙ্কর মরণফাঁদ হয়ে আছে। এর জন্য অবশ্যই জনগণ দায়ী নয় অথবা দায়ী নয় বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনৈতিক কোনো চাল। পথঘাট, সেতু, কালভার্ট ইত্যাদির করুণ ও বিপজ্জনক অবস্থার জন্য অবশ্যই দায়ী এই মহান দেশেরই কোনো না কোনো নাগরিক। ক্ষমতাবানরা যদি ক্ষমতা বিক্রি অথবা অপব্যবহার করেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা যদি দায়িত্বজ্ঞানহীন হন, নেতা-কর্মী-কর্মচারীদের যদি না থাকে দেশের প্রতি ন্যূনতম দায়বদ্ধতা তবে যা ঘটা সম্ভব তাই ঘটে চলেছে আমাদের দেশে। কাগজে-কলমে পথঘাট নির্মাণ বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যত অর্থ মঞ্জুর করা হয় তা যদি সঠিকভাবে ব্যয়িত হতো তবে পথ দুর্ঘটনা অনেক কমে যেত। এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করলে দুর্ঘটনা অবশ্যই হ্রাস পেত। এর পরই চলে আসে চালকদের কথা।  একজন চালকের কাজ যে কত মহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ তা বেশির ভাগ চালকই জানেন না।

                আফতাব চৌধুরী

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর