শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

পার্বত্য এলাকায় অশান্তি

অস্ত্র উদ্ধার জোরদার করুন

পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২২ বছর পরও দেশের তিন পার্বত্য জেলায় পরিপূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসেনি সশস্ত্র পাহাড়ি সংগঠনগুলোর তৎপরতার কারণে। গত পৌনে ছয় বছরে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর অন্তঃকোন্দল ও প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ের শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩২১ জন। শান্তিচুক্তির আগে পাহাড়ি সংগঠন শান্তিবাহিনীর আয়ের প্রধান উৎস ছিল চাঁদাবাজি। শান্তিচুক্তির পর শান্তিবাহিনী অস্ত্র সমর্পণ করলেও তাদের একাংশ ইউপিডিএফ নামে নতুন সংগঠন গড়ে তোলে এবং শান্তিচুক্তিবিরোধী অবস্থান বজায় রাখে। চাঁদাবাজির মাধ্যমে তারা নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করে তোলার কৌশল বেছে নেয়। জনসংহতি সমিতি ভেঙে ইউপিডিএফের জন্ম ও চাঁদাবাজির কর্তৃত্ব নিয়ে অন্তঃকোন্দল এবং দুই সংগঠনে আবারও ভাঙন পাহাড়ের পরিস্থিতিকে অশান্ত করে তুলছে। পাহাড়ে অবাঞ্ছিত সংঘাতের পেছনে কাজ করছে পাহাড়িদের গড়ে তোলা বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনী। এসব সশস্ত্র আঞ্চলিক দলের অন্তঃকোন্দল, নিজেদের প্রভাব বিস্তারের ঘটনায় বলি হচ্ছে নিরীহ পাহাড়বাসী। সন্ত্রাসীদের অবৈধ অস্ত্রের মুখে জিম্মি হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। রাঙামাটি পার্বত্য জেলার সরকারদলীয় এমপি দীপঙ্কর তালুকদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, পাহাড়ে জনপ্রতিনিধিদের জীবনেরও নিরাপত্তা নেই। এখানে স্বাভাবিক মৃত্যুর কোনো গ্যারান্টি নেই। শান্তিচুক্তিবিরোধী শক্তি এখানে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে খুবই তৎপর। তারা জনগণকে কোণঠাসা করে রাখতে চায়। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের প্রধান অন্তরায় এসব সশস্ত্র গ্রুপ। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলায় চাঁদাবাজির ঘটনা অনেকটাই কমেছে। কিন্তু তারা সব সময় চেষ্টা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে খেপিয়ে তুলতে; যা পাহাড়ের রাজনৈতিক, সামাজিক পরিস্থিতি অশান্ত করে তোলার জন্য দায়ী। পাহাড়ের বাসিন্দা পাহাড়ি-বাঙালি সবাই গুটিকয় সন্ত্রাসীর কাছে জিম্মি হয়ে থাকবে তা কোনোভাবে কাম্য হওয়া উচিত নয়। পার্বত্য এলাকার অধিবাসীদের স্বার্থেই পাহাড়ে অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার ও নিরাপত্তা বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধির বিষয়টি জরুরি হয়ে উঠেছে।

সর্বশেষ খবর