বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

মানব পাচারের অভিযোগ

এমপিকে প্রমাণ করতে হবে তিনি নির্দোষ

মানব পাচার এক জঘন্য অপরাধ। মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবেও চিহ্নিত করা যায় এ অপরাধকে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এ অপরাধের সঙ্গে একজন সংসদ সদস্যের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে। কুয়েতের গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুল মানব পাচারে জড়িত। কুয়েতে মানব পাচার করে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে কুয়েতে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যেও তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলছে। কুয়েত থেকে পরিচালিত ‘কুয়েত ফর বাংলাদেশি’ নামের একটি ফেসবুক পেজেও বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে। অবৈধ পথে কুয়েতে লোক নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে এমপি পাপুলের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য চেয়ে কুয়েত দূতাবাসকে চিঠি দিয়েছে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো। এ বিষয়ে দ্রুত একটি প্রতিবেদন পাঠাতে দূতাবাসকে অনুরোধ করা হয়েছে। কুয়েতি সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমপি শহিদুল নিজের নামে কিছুই করেন না। তিনি বিভিন্ন সাব-এজেন্টের মাধ্যমে মানব পাচারে জড়িত। বিশেষ করে ক্লিনিং ও সিকিউরিটির কাজের নামে মানব পাচার করেছেন এমন ধারণা প্রবল। পাপুল যে শুধু অবৈধ পথে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত তাই নয়, তিনি যেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন সব জায়গাতেই নিজের তথ্য গোপন রেখে করছেন। দেশেই জামায়াতে ইসলামী নিয়ন্ত্রিত দিগন্ত টিভি, নয়া দিগন্ত ও দিগন্ত মিডিয়ায় তিনি পরিচালকের পদ বাগিয়ে নিয়েছেন ৩ কোটি টাকার বিনিময়ে। অবশ্য এ টাকা তিনি তার ব্যাংক হিসাব থেকে দেননি। তথ্য-প্রমাণ না রাখতে নিজের শ্যালিকার হিসাবমাধ্যমে লেনদেন করেছেন। তিনি এমপি হওয়ার পর স্ত্রী সেলিনা ইসলামকে স্বতন্ত্র কোটায় সংরক্ষিত (মহিলা) সংসদ সদস্য নির্বাচিত করিয়েছেন। লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপির বিরুদ্ধে অভিযোগটি উঠেছে বিদেশি প্রচারমাধ্যমে। সরকারের পাশাপাশি এ সংবাদটি সংশ্লিষ্ট এমপির জন্যও বিড়ম্বনা হয়ে দেখা দিয়েছে। এখন সংসদ সদস্যকেই প্রমাণ করতে হবে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো ঠিক নয়। এটি প্রমাণ করতে পারলে ভাবমূর্তির সংকট থেকে তিনি অনায়াসে রেহাই পাবেন বলে আশা করা যায়। তা না হলে দেশের সম্মানহানির জন্য তাকে অভিযুক্ত হতে হবে। প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠবে তার সংসদ সদস্য পদে থাকার বিষয়টি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর