শনিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

নির্দেশনা না মানলে শাস্তি

জনস্বার্থে কঠোরতাই বাঞ্ছনীয়

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সারা দুনিয়ায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ঘরে থাকার নির্দেশনা ভঙ্গ করে কেউ অকারণে বাইরে এলে জেল-জরিমানাও করা হচ্ছে। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট কেউ বাইরে বের হলে প্রয়োজনে গুলি করার জন্য সেনা ও পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন। মানুষের জীবন বাঁচাতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ অনুভূত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। বাংলাদেশেও গত বৃহস্পতিবার থেকে সামাজিক দূরত্ব এবং হোম কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টি কঠোরভাবে নিশ্চিত করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় করা হয়েছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস থাবা বিস্তারের সুযোগ পেয়েছে হোম কোয়ারেন্টাইন না মানার কারণে। ইতালিসহ ইউরোপফেরত প্রবাসীদের অন্তত ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দিয়ে বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে দেওয়া হলেও তাদের সিংহভাগ এ নির্দেশনা মানেনি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং ঘরে থাকার সুযোগ সৃষ্টিতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও সেটিকে অনেকে গ্রামে ছুটি কাটানোর মহোৎসব হিসেবে নিয়েছে। নাগরিক অসচেতনতার কারণেই বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা সীমিত হলেও তাতে আত্মপ্রসাদ লাভের সুযোগ নেই। কারণ, করোনা এমন এক ভয়াবহ ভাইরাস তা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। ইতিমধ্যে এ ভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতির সমূহ সর্বনাশ ডেকে এনেছে। বিশ্বের সবচেয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের তালিকায় বাংলাদেশের নাম কয়েক বছর শোভা পেলেও এ বছর তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠতে পারে। বলা যায়, এ বছর অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে পৃথিবীর সাড়ে সাত শ কোটি মানুষ, বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষও সে দুর্ভাগ্যের শিকার। এ দুর্ভাগ্য যাতে সর্বগ্রাসী না হয় তা নিশ্চিত করতে হোম কোয়ারেন্টাইন জোরদার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। জাতীয় অস্তিত্বের স্বার্থেই সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তদারকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নাগরিকরা নিজেদের স্বার্থেই সুরক্ষার নির্দেশনা মেনে চলবেন- এমনটি প্রত্যাশিত। নির্দেশনা ভঙ্গ করে অকারণে বাইরে ঘোরাঘুরির জন্য জরিমানারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা দৃশ্যত কঠোর পদক্ষেপ হলেও দেশবাসীর জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে সমর্থনযোগ্য।

সর্বশেষ খবর